এশিয়া কাপে ভারত। ছবি এএফপি
চলতি এশিয়া কাপে ভারতের পারফরম্যান্সই বলে দিচ্ছে আগামী শুক্রবার ফাইনালে রোহিত শর্মাদেরই খেলতে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সুপার ফোরে গ্রুপ পর্বের পয়েন্ট যোগ না হলেও এ রকম আন্দাজ করতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। ভারত যে ভাবে পাকিস্তানকে সব দিক থেকে পিছনে ফেলে দিয়ে জিতল, তাতে আমার বিশ্বাস, রবিবার ওদের দ্বিতীয় বারের মুখোমুখিতে রোহিত শর্মারা অনেকটাই মনস্তাত্বিক সুবিধা নিয়ে মাঠে নামবেন।
ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ মানেই ক্রিকেট দুনিয়া জুড়ে হইচই। কিন্তু এই ম্যাচকে কেন্দ্র করে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ যতটা তুঙ্গে ওঠে, গত ৮-৯ বছর ধরে কিন্তু সেই পর্যায়ে পৌঁছতে পারছে না দুই দেশের ক্রিকেট দ্বৈরথ। কারণ, অতীতের পাকিস্তান আর এখনকার পাকিস্তানের মধ্যে অনেক ফারাক। আর ভারত সবদিক থেকেই ওদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। অনেকেই অবশ্য গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স মনে করিয়ে দেন। পাকিস্তান সেই প্রতিযোগিতা চলাকালীন ক্রমশ উন্নতি করে। ইংল্যান্ডকে হারানোর পরে ওরা ফাইনালে ভারতকেও হারায়। কিন্তু ওদের ওই একটি সাফল্যই মনে রাখার মতো, যা এখনও ওদের সম্বল। ভারতকেও সেই ব্যর্থতার বোঝা এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে আর রবিবারের ম্যাচেও সেই স্মৃতি নিয়েই নামতে হবে। এশিয়া কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে ওদের হারাতে না পারলে সেই হারের আসল বদলা নেওয়া হবে না বোধহয়। তবে এ বার যে পাকিস্তানকে দেখছি, তা মোটেই মনে ছাপ ফেলার মতো নয়। ভারতের মতো বেশি চাপের ম্যাচে পাকিস্তানকে আরও গোছানো হতে হবে। গত ম্যাচে ওদের যা শট বাছাই দেখা গিয়েছে, তাও একটা বড় ম্যাচের পক্ষে মোটেই মানানসই না।
ওয়ান ডে ক্রিকেট এখন আগের চেয়ে অনেক বদলে গিয়েছে। এখন ওয়ান ডে-তে অন্য মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করতে দেখা যায় ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু চলতি এশিয়া কাপে অতীতের ওয়ান ডে-র মতোই ব্যাটিং দরকার। একেই গরম, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি। তার ওপরে রোজই এখানে ম্যাচ হচ্ছে। এশিয়া কাপ যত গড়াবে, তত উইকেটে বল ঘোরা শুরু করবে। তাই যে দলে যত ভাল স্পিনার রয়েছে, তারা শেষ দিকে তত সুবিধে পাবে। সে দিক থেকে ভারতই সুবিধে পাবে বেশি।
আরও পড়ুন: জাড্ডুর ফেরার লড়াইয়ে দিদির সমর্থন, চোখ এখন কাপ জয়ে
আর ইনিংসের শেষ দিকেও উইকেট হাতে থাকবে যাদের, সেই দলের রান তাড়া করে জেতার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। সরফরাজ আহমেদ-দের আগের ম্যাচে এটা দেখাই যায়নি।
অনেকে বলছেন বটে, শুক্রবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে পাকিস্তানের ব্যাটিং মোটেই ভাল হয়নি। শুরুর দিকে এত ধীরগতিতে রান তুলেছিল ওরা যে, পরের দিকে চাপে পড়ে যায়। শেষ ওভারে শোয়েব মালিক চার-ছয় মেরে ম্যাচ জেতাতে না পারলে ফাইনালের দৌড়ে অনেক পিছিয়ে যেত পাকিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানের স্পিন বিভাগকে অবহেলা করার ভুল করবেন না। রশিদ খানকে তো অসাধারণ বললেও কম বলা হয়। এই বোলিং সামলেও যে ভাবে পাকিস্তান রান তাড়া করে শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ জিতে নিল, তা রবিবারের ম্যাচে ওদের যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস জোগাবে।
রোহিত শুধু ব্যাট হাতে নয়, অধিনায়কত্বেও অসাধারণ। শিখর ধওয়ন বরাবরই এই ধরনের ক্রিকেটে সফল, এই প্রতিযাগিতাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বোলিংটাও খুবই ভাল হচ্ছে। ভুবনেশ্বর কুমার ও যশপ্রীত বুমরার যে কোনও ধরনের ক্রিকেটেই দলের সম্পদ। ওদের দেখে বোঝা যায়, লাল ও সাদা বলের ফারাক নিয়ে যতই বিতর্ক হোক, যাদের যোগ্যতা আছে, তাদের কাছে এটা কোনও ব্যাপারই নয়। তাই ভারতকে হারাতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রচুর রান তোলা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। এটাই তাদের প্রতিপক্ষদের মনে রাখতেই হবে।
(গেমপ্ল্যান)