স্কুলের মাঠেই চলছে মেলা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
খেলা থেকে মেলা—সব কিছুতেই ভরসা ভজহরি স্কুলের মাঠ।
মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের প্রধান শহর হল বালিচক। এখানে বিডিও, বিএলএলআরও দফতর ছাড়া থানা, স্টেশন ও দুটি বিদ্যালয় আছে। কিন্তু খেলার মাঠ নেই। এর ফলে ক্রিকেট, ফুটবল, কবাডি, খোখো, স্কুলক্রীড়া বা ক্লাবের খেলা আর দৌড়ের অনুশীলন করতে বালিচক ভজহরি বিদ্যালয়ের মাঠই একমাত্রই ভরসা।
তবে শুধু খেলাই নয়, সরকারি বা বেসরকারি মেলা, বাৎসরিক অনুষ্ঠান —সব কিছুই চলে বিদ্যালয় চত্বরের এই মাঠটিতে। নানা অনুষ্ঠানের জন্য পড়ুয়াদের পঠনপাঠনেও ব্যাঘাত ঘটে। পাশাপাশি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে স্কুলের মাঠটি।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, এলাকার নানা ক্লাব, স্কুল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলা ছাড়াও মেলা, লোকাল ফেস্টিভ্যাল, যাত্রা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। এতে যেমন পড়াশোনার ক্ষতি হয়, তেমনই বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে থাকা ছেলেদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাসুদেব বর্মন বলেন, ‘‘বছরভর অনুষ্ঠান লেগে রয়েছে। দিনে দু’টি তিনটি অনুষ্ঠানের জন্যও মাঠের চাহিদা থাকে। মাত্র দু’ কিলোমিটার দূরে এক অডিটোরিয়াম থাকলেও অনুষ্ঠান, মিটিং করার জন্য সেখানে কেউ যান না। নানা অনুষ্ঠানে পড়াশোনার ব্যঘাত হয়, মাঝে মধ্যে টিফিনে স্কুল ছুটিও দিয়ে দিতে হয়। বালিচকে একটাই মাঠ তাই কাউকেই কিছু বলা যায় না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মাঠ বেহাল হলে রক্ষণাবেক্ষণে কেউ এগিয়ে আসেন না।’’
মাঠ নিয়ে সমস্যার কথা জানাচ্ছে স্থানীয় ক্লাবগুলি। তাদের অভিযোগ, খেলাধুলার জন্য মাঠ পেতে দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয়। শীতকালে সবাই চায় বার্ষিক ক্রীড়া করতে। সেই সময়ে মাঠ পাওয়া ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে হয়। নবারুণ ক্লাবের সম্পাদক প্রণব দাস এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘একটা মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল সবই খেলা হচ্ছে। ফলে কোনওটাই ভাল করে খেলা যায় না। প্রাতর্ভ্রমণের জন্যও এ মাঠই ভরসা এলাকাবাসীর। বিকল্প আর একটা মাঠ না হলে খুবই সমস্যা হয়।’’ নানা সমস্যার কথা শুনে ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে জেলা যুব আধিকারিক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘নতুন করে কোনও মাঠের ব্যবস্থা করে দিতে পারব না। তবে নিয়ম মেনে লিখিত আবেদন করলে মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করব।’’