পারিবারিক কাহিনি ফাঁস, ক্ষিপ্ত স্টোকস

স্টোকসের পরিবারকে নিয়ে মঙ্গলবার বিস্ফোরক এক কাহিনি প্রকাশ করে সাড়া ফেলে দিয়েছে ইংল্যান্ডের ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share:

প্রতিবাদ: সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তোপ স্টোকসের। ফাইল চিত্র

প্রথমে বিশ্বকাপ জয়। তার পরে অ্যাশেজে অসাধারণ পারফরম্যান্স। গত দু’মাস ধরে কোনও না কোনও ভাবে ঠিক শিরোনামে থেকেছেন বেন স্টোকস। অ্যাশেজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি উঠে এসেছেন শিরোনামে। কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য কারণে। যে কারণটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার।

Advertisement

স্টোকসের পরিবারকে নিয়ে মঙ্গলবার বিস্ফোরক এক কাহিনি প্রকাশ করে সাড়া ফেলে দিয়েছে ইংল্যান্ডের ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’। যে কাহিনি প্রথম পাতায় প্রকাশিত হওয়ার পরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ স্টোকস টুইটারে আক্রমণ করেছেন ওই ট্যাবলয়েডকে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার পরিবারকে নিয়ে ৩১ বছর আগের এক যন্ত্রণাদায়ক এবং অত্যন্ত ব্যক্তিগত প্রতিবেদন আজ প্রকাশ করেছে দ্য সান। সাংবাদিকতার মোড়কে এ রকম ঘৃণ্য এবং নিম্নরুচির প্রতিবেদন সম্পর্কে কী বলব, বুঝে উঠতে পারছি না।’’ কী ঘটেছিল ৩১ বছর আগে? বিস্ফোরক এবং যন্ত্রণাদায়ক ওই কাহিনি বেনের মা ডেবকে ঘিরে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চে বেনের সৎ ভাই এবং বোনকে গুলি করে মেরেছিলেন ডেবের প্রাক্তন স্বামী রিচার্ড ডান। বেনের জন্মানোর তিন বছর আগে ঘটে ওই ঘটনা। পারিবারিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘ডান এবং ডেবের দুই সন্তান ছিল ট্রেসি এবং অ্যান্ড্রু। ১৯৮৮ সালে যাদের গুলি করে মারে ডান। ওই সময় ট্রেসির বয়স ছিল আট, অ্যান্ড্রুর চার।’’

কেন ও রকম করেছিলেন ডান? ডেবের সঙ্গে বিচ্ছেদটা নাকি একেবারেই মেনে নিতে পারেননি তিনি। বিশেষ করে ডান যখন শোনেন, রাগবি কোচ জেরার্ড স্টোকসের (বেন স্টোকসের বাবা) সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন ডেব। আদালতের নির্দেশে সপ্তাহে দু’দিন করে বাচ্চাদের দেখভালের দায়িত্ব ছিল ডানের উপরে। ওই রকমই একটা দিনে দুই বাচ্চাকে রাইফেল দিয়ে গুলি করে মারেন ডান। এর পরে তিনি যান ডেবের বাড়িতে। কিন্তু বেনের মা তখন সেখানে ছিলেন না। এর পরে নিজের আবাসনে ফিরে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন ডান। পুলিশ এসে ঘিরে ধরলে নিজের ঘরে ঢুকে যান তিনি। মিনিট দশেক পরেই পরপর দুটো গুলির আওয়াজ। পুলিশ ঢুকে দেখতে পায় আত্মহত্যা করেছেন ডান। একটু পরে মৃত দুই শিশুর দেহও খুঁজে পায় পুলিশ। স্বাভাবিক ভাবেই বেন স্টোকস কোনও দিন এই নিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু ডানের প্রথম পক্ষের মেয়ে জ্যাকি এত দিনে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন। ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটার সময় জ্যাকির বয়স ছিল ১৮। ট্যাবলয়েডে জ্যাকি বলেছেন, ‘‘আমি তখন একটা দোকানে কাজ করতাম। ওই ঘটনার আগের দিন বাবা দেখা করতে এসেছিল। কিন্তু আমি ছিলাম না। এর পরে আর বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি। পরে ওই ঘটনার কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারিনি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ডেব এতটাই বিধ্বস্ত আর বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল যে, ডানের কফিনে ক্রমাগত লাথি মারতে থাকে।’’ এই ঘটনার তিন বছর পরে বেনের জন্ম। যাঁকে নিয়ে ফের বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন ডেব।

Advertisement

মঙ্গলবার এই কাহিনি প্রকাশ হওয়ার পরে তাঁর দীর্ঘ টুইটে বেন আরও লেখেন, ‘‘তিরিশ বছর ধরে এই ঘটনা ভুলে থাকতে চেয়েছিল আমার পরিবার। এই শনিবার দ্য সান এক সাংবাদিককে পর্যন্ত পাঠিয়ে দিয়েছিল ক্রাইস্টচার্চে। আমার বাবা-মার সঙ্গে কথা বলতে। আমার নাম করে বাবা-মার ব্যক্তিগত জীবন ধ্বংস করার এই চেষ্টা ন্যক্কারজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন