যখন ডার্বির মঞ্চে নজর কাড়লেন সিকিমের বিকাশ জাইরু, তখন অফ ফর্মের জন্য কোচের রক্তচক্ষুর সামনে প্রীতম কোটাল। বিকাশ খেললেন ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে, প্রীতম মোহনবাগানের। ম্যাচ শেষে বিকাশ জাইরুকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত র্যান্টি থেকে ভাইচুং। একই সময় প্রীতম কোটালের জন্য সঞ্জয় সেন শুনিয়ে গেলেন সাবধানবাণী। বললেন, ‘‘ওকে আগেও বলেছি। এমন চললে জায়গা হারাতে হবে।’’ আই লিগের প্রথম ম্যাচে সেম সাইড গোলের পর এখনও হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস ফিরে পাননি দেশের জার্সিতে নিয়মিত খেলা এই রাইটব্যাক। ডার্বির মঞ্চেও মোহনবাগান রক্ষণকে ভরসা দিতে পারলেন না। অন্য দিকে, ডার্বির মঞ্চ থেকে ভারতীয় ফুটবলে হয়তো শুরু হয়ে গেল বিকাশের নতুন পথ চলা। র্যান্টি বলে গেলেন, ‘‘ও ভবিষ্যতের তারকা।’’ কোচ বিশ্বজিতও তাঁর ছাত্রকে নিয়ে গর্বিত।
ভাইচুং ভুটিয়ার রাজ্য থেকে তাঁর পরে অনেকেই ভারতীয় ফুটবলে বিভিন্ন সময়ে নিজেদের নাম লিখিয়েছেন। নতুন সংযোজন এই বিকাশ জাইরু। নামচি অ্যাকাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন সিকিমের এই ছেলে। তাঁর উচ্ছ্বাস অবশ্য অন্য কারণে। তিনি ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পরে ডার্বি খেললেন তাও আবার তাঁর আইডল ভাইচুং ভুটিয়ার সামনে। বলছিলেন, ‘‘এটা আমার কাছে বড় পাওনা। ভাইচুংয়ের সামনে খেললাম। আর আমার ক্রস থেকেই গোল এল।’’ ভেবেই রেখেছিলেন নিজের কাজটা ঠিক মতো করে যেতে হবে ৯০ মিনিট। বলছিলেন, ‘‘আমি ভেবেই রেখেছিলাম ক্রসগুলো একদম ঠিকঠাক রাখতে হবে। সেটা আমি অনেকটাই পেরেছি।’’ এই ডার্বিতে কেউ হিরো হয়নি। কিন্তু বিকাশ জাইরুই এই ডার্বির নতুন মুখ। কলকাতা লিগ থেকে আই লিগের দলকে ভরসা দিচ্ছেন শুরু থেকেই। তাই বড় ম্যাচে তাঁকে বাদ দিয়ে দল সাজাতে পারেননি কোচ। সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন ভাইচুং, নির্মল, সঞ্জুদের দেখানো পথে উঠে আসা এই পাহাড়ি ফুটবলার।
এ দিন ভাইচুংয়ের সঙ্গে খেলা দেখতে এসেছিলেন রেনেডি সিংহও। জেজেকে প্রথম থেকে দলে না রাখার সমালোচনাই করে গেলেন তিনি। ম্যাচের মান নিয়ে সবাই একমত। প্রথম ডার্বিতেই গোল পেয়ে খুশি কর্নেল গ্লেন অবশ্য অকপট। বলছিলেন, ‘‘আমরা প্রথমার্ধটা খেলতে পারিনি। বিরতিতে আলোচনা করে দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটাই শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। সোমবার এই ম্যাচের ঠিক ভুলগুলো নিয়ে অবশ্যই আলোচনা হবে।’’ ডার্বির মঞ্চ এরকমই। কেউ হিট হয় কেউ ফ্লপ। কিন্তু প্রীতম কোটালরা হারিয়ে যান না। খারাপ সময় কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন স্বমহিমায়। বিকাশরা উঠে আসেন প্রতি ডার্বিতেই।
আরও খবর: ড্র ডার্বিতে অধরাই থেকে গেল ভাল ফুটবল