(উপরে বাঁ দিক থেকে) শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা। নীচে, অক্ষর পটেল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া এক দিনের সিরিজ়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর থাকবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার প্রত্যাবর্তনের দিকে। আগ্রহ থাকবে শুভমন গিলের অধিনায়কত্ব নিয়েও। প্রথম এক দিনের ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে অধিনায়ক শুভমনকে নিয়ে কথা বলতে হল অক্ষর পটেলকেও। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ট্রেভিস হেডের আশা, ২০২৭ সালের বিশ্বকাপে খেলবেন কোহলি এবং রোহিত।
আগামী রবিবার প্রথম এক দিনের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। তার আগে ভারতীয় দলের পক্ষ থেকে শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অক্ষর। এই সিরিজ়েই ভারতকে এক দিনের ক্রিকেটে প্রথম বার নেতৃত্ব দেবেন শুভমন। মাঠে থাকবেন কোহলি এবং রোহিতের মতো দুই প্রাক্তন অধিনায়ক। অধিনায়ক হিসাবে শুভমন কি চাপে থাকবেন? এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার। অক্ষর বরং মনে করছেন, এই সিরিজ় অধিনায়ক শুভমনের শেখার সুযোগ। তিনি বলেছেন, ‘‘ইংল্যান্ড সফরের মতো এক দিনের দলের অধিনায়ক হিসাবেও শুভমনের দুর্দান্ত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। নেতৃত্বের দায়িত্ব শুভমনকে একদমই চাপে ফেলেনি। এটা ওর দারুণ গুণ। আমি অনেক অধিনায়কের অধীনে খেলেছি। এখন তরুণেরা সুযোগ পাচ্ছে। এটা পরিবর্তনের সময়। আমরা তরুণদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছি। খেলার ধরন নিয়ে আলোচনা করছি আমরা। যে তরুণেরা আসছে, তারা আইপিএল খেলেছে। বড় মঞ্চে খেলার জন্য সকলে প্রস্তুত।’’
অক্ষর মনে করেন না সাজঘরে কোহলি এবং রোহিতের উপস্থিতিতে অধিনায়ক শুভমনের সমস্যা হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অধিনায়ক হওয়ার সময়ের উদাহরণ দিয়েছেন। অক্ষর বলেছেন, ‘‘শুভমনের জন্য ধোনির নেতৃত্বের শুরুর সময়টাই সেরা উদাহরণ। সাজঘরে কোহলি এবং রোহিত দু’জনেই থাকবে। আমরা একটা পরিবর্তন পর্বের সাক্ষী থাকতে পারব। পরিবর্তনের এই সময় তরুণদের পাশে সিনিয়রদের থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে কঠিন পরিস্থিতি কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, তা শিখতে পারবে তরুণেরা। মাঠে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়, এ সব নিয়ে আমাদের সাজঘরে আলোচনা হয়। আমার তো মনে হয় শুভমন অধিনায়ক হিসাবে একটা আদর্শ পরিবেশ পাবে সাজঘরে। কোহলি-রোহিতকে পাশে পাবে। অধিনায়ক হিসাবে পরিণত হওয়ার সুযোগ পাবে শুভমন। ওর জন্য এটা দারুণ সুযোগ। আমাদের দলে অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। সকলের একসঙ্গে মিশে যেতে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’’ উল্লেখ্য, ধোনি প্রথম অধিনায়ক হওয়ার সময় ভারতীয় দলে ছিলেন সচিন তেন্ডুলকর এবং রাহুল দ্রাবিড়ের মতো ক্রিকেটার।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর এই প্রথম এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে ভারত। সেই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অধিনায়ক রোহিতের ভারতীয় দল। তবু অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে এক দিনের দলের নেতৃত্ব থেকে রোহিতকে সরিয়ে শুভমনকে এনেছেন গৌতম গম্ভীর, অজিত আগরকরেরা। এক দিনের আন্তর্জাতিক থেকে ভারতীয় দলের এই বিরতি নতুন অধিনায়কের জন্য সহায়ক বলে মনে করেন অক্ষর।
অস্ট্রেলিয়া শিবিরের পক্ষে এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হেড। সুকৌশলে তিনি ভারতীয় শিবিরের নতুন সমীকরণকে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। প্রধান নির্বাচক আগরকর জানিয়েছেন, ২০২৭ বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় কোহলি-রোহিত রয়েছেন। তবে তাঁদের দলে থাকার ব্যাপারে এখনই কোনও নিশ্চয়তা দিতে চাননি। বুঝিয়ে দিয়েছেন, দু’বছর পর বিশ্বকাপ খেলতে হলে কোহলি এবং রোহিতকে পারফর্ম করতে হবে। হেড বলেছেন, ‘‘ভারতের হয়ে কোহলি এবং রোহিতের পারফরম্যান্স অসাধারণ। সাদা বলের ক্রিকেটে দু’জনেই দুর্দান্ত। কোহলি সম্ভবত সর্বকালের সেরা সাদা বলের ক্রিকেটার। রোহিত খুব পিছিয়ে নেই। ওপেনার হিসাবে ওর নিজের একটা ঘরানা রয়েছে। ওপেনার রোহিতের কীর্তির প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। একটা সময় ওদের অভাব অনুভব করব আমরা। তবে আমার মনে হয় ওরা দু’জনেই ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলবে। তাই না? ওরা নিশ্চই বিশ্বকাপ খেলার চেষ্টা করবে। ওরা যে এখনও খেলছে, এটা ক্রিকেটের জন্যই ভাল।’’
আসন্ন সিরিজ়ে অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য নিয়ে আশাবাদী হেড। কোহলি-রোহিতেরা থাকলেও তিনি আত্মবিশ্বাসী। আন্তর্জাতিক ম্যাচে এবং আইপিএলে তাঁদের বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান। তাঁর আশা ভবিষ্যতে কখনও কোহলি বা রোহিতের সঙ্গে এক দলে খেলার এবং শেখার সুযোগ পাবেন।