রোহিত শর্মার ক্যাচ ফস্কানোর সেই মুহূর্ত। ছবি: পিটিআই।
বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিতলেও রোহিত শর্মা এবং হার্দিক পাণ্ড্যের দু’টি সহজ ক্যাচ ফেলা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রশ্ন উঠছে এত সহজ ক্যাচ কী করে দু’জন ফেললেন। তার কোনও সদুত্তর পাওয়া না গেলেও, যে মাঠে খেলা হয়েছিল সেই দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এর আগে অসংখ্য ক্যাচ পড়েছে। শুধু দু’টি প্রতিযোগিতার হিসাব ধরলে এই সংখ্যাটা দেড়শোর উপর।
প্রশ্ন উঠছে দুবাইয়ের মাঠের ফ্লাডলাইট নিয়ে। তবে ফ্লাডলাইটের জন্য রোহিত এবং হার্দিক ক্যাচ ফেলেছেন, সে কথা একেবারেই বলা যাবে না, কারণ ওই সময় স্বাভাবিক আলোয় খেলা হচ্ছিল।
কেন দায়ী করা হচ্ছে স্টেডিয়ামের কৃত্রিম আলোকে? সাধারণত ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলিতে কৃত্রিম আলো লাগানো থাকে উঁচু স্তম্ভে। কোনও মাঠে চারটি, কোনও মাঠে আটটি, আবার কোথাও ১৬টি বাতিস্তম্ভ থাকে। কিন্তু দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে কোনও বাতিস্তম্ভ নেই। এই মাঠে গ্যালারির ছাদ জুড়ে ৩৫০টি আলো লাগানো। সাধারণত এটা ফুটবল মাঠে দেখা যায়। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এই ধরনের আলো আছে। উপর থেকে দেখলে মনে হবে আংটির মতো গোল কোনও বস্তুতে আগুন জ্বলছে। সেই কারণেই ‘রিং অফ ফায়ার’ বা ‘আগুনের আংটি’ বলা হয় একে। এই অস্বাভাবিক ফ্লাডলাইটের কারণেই ক্রিকেটারদের ক্যাচ ধরতে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কৃত্রিম আলোয় যখন খেলা হচ্ছে, তখন ক্রিকেটারেরা ক্যাচ নেওয়ার জন্য উপরের দিকে তাকালে চোখে ধাঁধা লেগে যাচ্ছে। দায়ী এই প্রথা-বহির্ভূত ফ্লাডলাইট। আলোগুলি যে উচ্চতায় রয়েছে তাতে উপরের দিকে তাকালে সরাসরি ক্রিকেটারদের চোখে লাগছে। ক্যাচ ধরতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আরও এক বার পরিষ্কার করে দেওয়া প্রয়োজন, ভারত যখন ফিল্ডিং করছিল, তখন মাঠে সূর্যের আলোই ছিল।
দুবাইয়ের মাঠে এই সমস্যা নতুন নয়। গত বছর মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বার বার ক্যাচ পড়তে দেখা গিয়েছিল। সেই প্রতিযোগিতায় সব দল মিলিয়ে ২০টি ম্যাচে ৮৮টি ক্যাচ ফেলেছিল। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে পাকিস্তান আটটি ক্যাচ ফেলেছিল। ওই প্রতিযোগিতায় প্রতি ম্যাচে মাত্র ৬৫.৭ শতাংশ ক্যাচ ধরেছিলেন ক্রিকেটারেরা। ২০২১ সালে ছেলেদের আইপিএলে ৩২২টি ক্যাচ উঠেছিল। তার মধ্যে ৯৩টিই পড়েছিল। ৭৭.৫ শতাংশ ক্যাচ ধরেছিলেন ক্রিকেটারেরা।
প্রাক্তন ক্রিকেটার বিজু জর্জ সেই সময় বলেছিলেন, “উপরের দিকে ক্যাচ উঠলে সমস্যা হয় দুবাইয়ে। আলোটা গোল আকৃতিতে থাকার কারণেই এই সমস্যা হয়। বল কোন জায়গায় রয়েছে, সেটা বোঝা যায় না। মাঠে বাতিস্তম্ভ থাকলে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় আলো থাকে। তাতে ফিল্ডারেরা সরে গিয়ে বল দেখার জায়গা করে নেয়। দুবাইয়ে সেটা করা যায় না। আলো যে ভাবে থাকে তাতে একটা সময়ে বলটা আর দেখা যায় না।”
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বৃহস্পতিবার ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে দুই দলই বেশ কিছু ক্যাচ ফেলে। ভারতের ইনিংসে শুভমন গিলের ক্যাচ ফেলেছিলেন জাকের আলি। ডিপ স্কোয়্যার লেগে দাঁড়ানো বাংলাদেশি ফিল্ডার উপরের দিকে তাকিয়ে ক্যাচ ধরতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। আলোর কারণেই সেই সমস্যা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।