সূর্যকুমার যাদব। — ফাইল চিত্র।
মেরেকেটে ১২ মিনিটের সাংবাদিক বৈঠক। সেখানে অন্তত ছ’টি প্রশ্ন করা হল পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে। উত্তরও দিলেন তিনি। কিন্তু নিজের মুখে এক বারও উচ্চারণ করলেন না পাকিস্তানের নাম। ‘ওরা’, ‘ওদের’, এই জাতীয় শব্দ দিয়েই বর্ণনা করলেন বিপক্ষ দলকে। পাকিস্তানের মতো বড় ম্যাচ কী ভাবে সামলাতে হবে, তার জন্য সতীর্থদের পরামর্শও দিয়ে দিলেন সূর্যকুমার যাদব। এটাও জানিয়ে রাখলেন, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর কাছে রবিবারটা দারুণ কাটবে।
গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে সাত উইকেটে হারিয়েছিল ভারত। সেই ম্যাচে অনেকেই প্রথম বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন কয়েক জন ভারতীয় ক্রিকেটার। সুপার ফোরে আবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তার আগে হাসতে হাসতে সূর্যের পরামর্শ, “ঘরের দরজা বন্ধ করো। ফোন সুইচ অফ করে ঘুমিয়ে পড়ো। এটাই সবার সেরা।”
পর ক্ষণেই কিছুটা সিরিয়াস ভারতের অধিনায়ক। বললেন, “দেখুন, বলা যতটা সহজ কাজে করা ততটা সহজ নয়। অনেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়, একসঙ্গে নৈশভোজে যাই। দলের অনেকে আছে যারা এ সব করতে ভালবাসে। কাজটা কঠিন। তবে আপনি কী করবেন, কার কথা শুনবেন, মন কী বলছে এগুলোর উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।”
সূর্যের সংযোজন, “সতীর্থদের কাছে একটা কথা স্পষ্ট বলে দিয়েছি। এই প্রতিযোগিতায় ভাল কিছু করতে হলে সবার আগে বাইরের আওয়াজ শোনা বন্ধ করে দিতে হবে। নিজে কোনটা চাও সেটা বুঝে নিতে হবে। পুরোপুরি আওয়াজ বন্ধ করতে বলিনি। কিন্তু যেটা ভাল শুধু সেটাই শোনা উচিত। অনেকেই আছেন যাঁরা ভাল পরামর্শ দেন, তাতে ভবিষ্যতে খেলায় উন্নতি হতে পারে। এটুকু বলতে পারি, মানসিক ভাবে সকলেই ভাল জায়গায় রয়েছে।”
সূর্যকুমারকে যত বারই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের বিতর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, তত বারই তিনি টেনে এনেছেন ক্রিকেটীয় লড়াইকে। বিতর্কে কোনও ইন্ধন দিতে চাননি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, রবিবার করমর্দন করবেন কি না। সূর্য বলেন, “দুই দলের মধ্যে ব্যাট-বলের ভাল লড়াই হবে। আগ্রাসী মানসিকতার লড়াই হবে। স্টেডিয়াম ভর্তি থাকবে। তাই দুই দলই অনেক সমর্থন পাবে। দেশের হয়ে সেরাটা দেওয়া এবং মানুষকে বিনোদন দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সঙ্গে যে শত্রুতা জড়িয়ে রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় সূর্যকে। তিনি বলেন, “সেই সময়ের কথা জানি না। আমি তো ওই ম্যাচে খেলিনি। জানি না কী ধরনের শত্রুতার কথা আপনারা বলছেন। মাঠে গিয়ে দেখি স্টেডিয়াম পুরো ভর্তি রয়েছে কি না। স্টেডিয়াম ভর্তি থাকলে দলকে বলি, এ বার আমাদের বিনোদন উপহার দেওয়ার সময় এসেছে। এত লোক খেলা দেখতে এলে তাদের বিনোদন দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তাই রবিবারও ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই আমরা।”
গত ১৪ সেপ্টেম্বর, প্রথম ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের দিন সূর্যের জন্মদিন ছিল। অপরাজিত ৪৭ রান করে তিনি দলকে জিতিয়েওছিলেন। সেটাই কি তাঁর সেরা ম্যাচ? সূর্যের সপাটে উত্তর, “ভারতের হয়ে খেলা প্রথম ম্যাচটাই সেরা। তার পর থেকে যতগুলো ম্যাচে ভারতের জার্সি পরে নেমেছি, সবই আমার কাছে গর্বের মুহূর্ত। জাতীয় সঙ্গীতের সময় চোখ বন্ধ রাখি। কারণ তত ক্ষণে ম্যাচে ঢুকে গিয়েছি।”