ভারতের পেসার আকাশদীপ। ছবি: পিটিআই।
ইংল্যান্ড সিরিজ়ে নজর কেড়েছেন আকাশদীপ। এজবাস্টনে তাঁর ১০ উইকেট ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছে। ভাল বল করেছেন ওভালেও। দেশে ফেরার পরেই আকাশদীপের পরিবারে এল নতুন সদস্য। গাড়ি কিনলেন বাংলার পেসার। নিজেই ছবি পোস্ট করে সে কথা জানিয়েছেন। এ দিকে, ওভালে বেন ডাকেটকে আউট করে আকাশদীপ যে আচরণ করেছিলেন তার জন্য শাস্তি চেয়েছেন ইংরেজ ব্যাটারের কোচ।
শুক্রবার আকাশদীপ নিজের সমাজমাধ্যমে একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানেই দেখা গিয়েছে তাঁর নতুন গাড়ি। সঙ্গে লিখেছেন, “স্বপ্ন পূরণ হল। হাতে চাবি পেলাম। আমার জীবনে যাঁরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাঁরাই সঙ্গে রয়েছেন।” আকাশদীপের গোটা পরিবারকে দেখা গিয়েছে এই মুহূর্তের সঙ্গী হতে। বাড়ির সকলকে নিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন তিনি।
নতুন গাড়ি এবং বোনেদের সঙ্গে আকাশদীপ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
এ দিকে, ওভাল টেস্টে ডাকেটকে আউট করে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরে বিদায় জানিয়েছিলেন আকাশদীপ। বিষয়টা একেবারেই পছন্দ হয়নি ডাকেটের ছোটবেলার কোচ জেমস নটের। তিনি ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে বলেছেন, “খুব হাড্ডাহাড্ডি সিরিজ়ের একটা অংশ ছিল ওটা। তবে তরুণ ক্রিকেটারেরা ভবিষ্যতে যাতে ওই কাজ না করে তার জন্য শাস্তি দেওয়া দরকার ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে ওই ঘটনায় অবশ্য আমি বিশেষ চিন্তিত নই।”
উল্লেখ্য, ওভালে ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরু থেকেই লেগে গিয়েছিল আকাশদীপ ও ডাকেটের। তাঁর একটা বল রিভার্স পুল করে ছক্কা মারেন ডাকেট। তার পর ইংরেজ ব্যাটার আকাশদীপকে বলেন, “তুমি আমাকে আউট করতে পারবে না।” এতে আকাশদীপও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। দু’জনের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে। আকাশদীপের একটা বল ডাকেটের প্যাডে লাগলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে ভারত। আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে দেখা যায়, বল উইকেটের উপর দিয়ে যাচ্ছে। পরের ওভারেই আকাশদীপের বলে তিনটে চার মারেন ডাকেট।
৪৩ রানের মাথায় আকাশদীপের বলে রিভার্স স্কুপ করার চেষ্টা করেন ডাকেট। বল ব্যাটের কানায় লাগে। উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল ক্যাচ ধরেন। ৩৮ বলে ৪৩ রান করে আউট হন ডাকেট। তার পরে দেখা যায়, আকাশদীপ ডাকেটের গলা জড়িয়ে ধরে কিছু একটা বলছেন। তাঁর মুখে হাসি থাকলেও ধারাভাষ্যকারদের মনে হয়েছে বিদ্রুপ করছেন তিনি। ডাকেটের মুখে কিন্তু হাসি ছিল না। কিছু ক্ষণের মধ্যে আকাশদীপকে সরিয়ে নিয়ে যান লোকেশ রাহুল।
ঘটনার পর সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে রিকি পন্টিং বলেন, “প্রথমে দেখে তো ভেবেছিলাম ওরা বন্ধু। প্রতি দিন এই ছবি দেখা যায় না। পাড়ার পার্কে দেখা যেতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়। ডাকেটের খেলা দেখে আমার ভাল লাগে। কিন্তু ও যে ভাবে নির্লিপ্ত থাকল তাতে ওর প্রতি শ্রদ্ধা আমার বেড়ে গিয়েছে।” সে কথা শুনে আর এক ধারাভাষ্যকার ইয়ান ওয়ার্ড বলেন, “আমি কয়েক জনের কথা মনে করতে পারছি যারা এই পরিস্থিতিতে থাকলে ঘটনাটা অন্য রকম হত। তার মধ্যে তুমিও একজন। তুমি থাকলে কি পন্টিংয়ের ডান হাতের ঘুষিটা দেখা যেত?” জবাবে পন্টিং হলেন, “অবশ্যই।”
ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ মার্কাস ট্রেসকোথিক জানিয়েছেন, ডাকেটের জায়গায় তিনি নিজে থাকলে কনুইয়ের গুঁতো মারতেন আকাশদীপকে। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে ট্রেসকোথিক বলেন, “আমি এটুকু বলতে পারি, আমাদের সময়ের বেশ কয়েক জন ব্যাটার ওই পরিস্থিতিতে আকাশদীপকে কনুইয়ের গুঁতো মারত। তার মধ্যে আমিও একজন। আউট করার পর কোনও বোলারকে ওই ভাবে গলা জড়িয়ে ধরতে আমি কোনও দিন দেখিনি। অনেকে মুখে অনেক কিছু বলে। কিন্তু ওই কাজ করে না।”