ইডেনে গুজরাতের বিরুদ্ধে উইকেট নিয়ে উল্লাস মহম্মদ শামির। ছবি: পিটিআই।
ছন্দে মহম্মদ শামি। ভারতীয় দলে জায়গা না পেয়ে কি নিজেকে প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বাংলার পেসার? ইডেন গার্ডেন্সে আগের ম্যাচে উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচে গুজরাতের বিরুদ্ধে দুই ইনিংস মিলিয়ে নিলেন ৮ উইকেট। তার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে এল ৫ উইকেট। শামির দাপটেই খেলার শেষ দিন দুই সেশনে গুজরাতকে উড়িয়ে দিল বাংলা। ১৪১ রানে এই ম্যাচ জিতে চলতি রঞ্জির মরসুমের শুরুটা ভাল হল বাংলার। ঘরের মাঠে পর পর দু’ম্যাচ জিতল লক্ষ্মীরতন শুক্লের দল। দু’ম্যাচে বাংলার পয়েন্ট ১২। শামিদের ফর্ম খুশি করবে বাংলার ক্রিকেট সংস্থার নতুন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
শামিকে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়ের দলে না নেওয়ার পর ভারতের নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর জানিয়েছিলেন, শামির ফিটনেস সম্পর্কে কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। রঞ্জির প্রথম ম্যাচে নামার আগে জবাব দিয়েছিলেন শামি। জানিয়েছিলেন, তথ্য দেওয়া তাঁর কাজ নয়। তাঁর সঙ্গে বোর্ড যোগাযোগ করেনি। শামি প্রশ্ন করেন, তিনি যদি রঞ্জি খেলতে পারেন, তা হলে এক দিনের ক্রিকেট কেন খেলতে পারবেন না? শামি পর পর দু’ম্যাচে জবাব দিলেন। বার্তা দিলেন আগরকরদের। সামনেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ়। সেখানে কি শামিকে অবহেলা করতে পারবেন আগরকরেরা? বিশেষ করে তিনি যখন নিজেই বলেন যে জাতীয় দলে জায়গা পেতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলতে হবে। শামি তো সেই কাজটাই করলেন। পর পর দু’ম্যাচে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের ফয়সালার জন্য চতুর্থ দিন ঝুঁকি নিতে হত বাংলাকে। সেটাই করলেন অভিমন্যু ঈশ্বরণেরা। তৃতীয় দিনের শেষে বাংলার রান ছিল ৬ উইকেটে ১৭০। চতুর্থ দিন আর ৪৪ রান যোগ করে ৮ উইকেটে ২১৪ রানের মাথায় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয় বাংলা। অনুষ্টুপ মজুমদার করে ৫৮ রান। শেষ বেলায় ১৮ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলেন আকাশদীপ। গুজরাতের সামনে ৩২৭ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলা। তারা জানত, গুজরাতের যা ব্যাটিং আক্রমণ তাতে এক দিনের কম সময়ে তাদের পক্ষে এই রান করা কঠিন। পাশাপাশি গুজরাতকে আউট করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দরকার ছিল বাংলার বোলারদের।
বাংলার ঝুঁকি তাদের ৩ পয়েন্টের জায়গায় ৬ পয়েন্ট এনে দিল। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৪৫.৫ ওভার টিকতে পারল গুজরাত। অর্থাৎ, দু’টি সেশনও নয়। একমাত্র ভাল দেখাল উইকেটরক্ষক উর্বিল পটেলকে। ১০৯ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। কিন্তু জয়মীত পটেল (৪৫) ছাড়া আর কেউ তাঁকে সঙ্গ দিতে পারলেন না। গুজরাতের আট ব্যাটার দুই অঙ্কে পৌঁছোতে পারেননি। ছ’জন শূন্য রানে আউট হন।
ইনিংসের শুরু ও শেষে উইকেট নিলেন শামি। মাঝের ওভারে উইকেট তুললেন গুজরাতের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া শাহবাজ় আহমেদ। শামি এমন একজন বোলার, যিনি যত বেশি বল করেন তত ফিট হন। তত ছন্দ খুঁজে পান। চোট সারিয়ে ফেরার পর প্রথম ম্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ম্যাচে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর দেখাল তাঁকে। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগালেন শামি। ১৮৫ রানে শেষ হয়ে গেল গুজরাত। শামি ছাড়া আকাশদীপ ১ ও শাহবাজ় ৩ উইকেট নিয়েছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে শাহবাজ় ৯ ও আকাশদীপ ২ উইকেট নিয়েছেন। অর্থাৎ, গুজরাতের ২০ উইকেটের মধ্যে ১৯টিই এই তিন বোলারেরা দখলে। বাকি একটি রান আউট।