শতরানের জুটি গড়লেন রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) ও রায়ান রিকেলটন। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম দু’ওভারের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, সমস্যা হচ্ছে মুম্বইয়ের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও রায়ান রিকেলটনের। তৃতীয় ওভার শুরু হওয়ার আগেই জয়পুরের স্টেডিয়ামে ওঠে ধুলোঝড়। সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পাণ্ড্যেরা ডাগ আউট ছেড়ে সাজঘরে চলে যান। যদিও খেলা থামাননি আম্পায়ারেরা। ধুলোঝড় থামার পর জয়পুরের মাঠে ঝড় তুললেন রোহিত ও রিকেলটন। প্রথম দু’ওভারে যেখানে ১০ রান হয়েছিল, সেখানে পাওয়ার প্লে শেষে হল ৫৮ রান। এক বার হাত খোলা শুরু করার পর আর তা থামাননি মুম্বইয়ের দুই ওপেনার। তাঁরা অর্ধশতরান করে ফেরার পরেও রান তোলার গতি কমেনি। সূর্য ও হার্দিকও একই ছন্দে খেলেন। আরও একটি ম্যাচে বড় রান করল মুম্বই। রাজস্থানের ঘরের মাঠে তাদের সামনে ২১৮ রানের লক্ষ্য দিল তারা।
এ বারের আইপিএলে শেষ চারটি ম্যাচে ফর্মে ফিরেছেন রোহিত। করেছেন ১৮২ রান। সেই ফর্ম দেখা গেল রাজস্থানের বিরুদ্ধেও। উইকেটের চার দিকে খেললেন তিনি। মাঝে আম্পায়ার এক বার এলবিডব্লিউ দেন তাঁকে। রিভিউ নিয়ে বাঁচেন রোহিত। তার পরে আরও হাত খোলেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন অধিনায়ক। পাশাপাশি রিকেলটনও ভাল ফর্মে রয়েছেন। তিনিও বড় শট খেলতেই থাকেন। জয়পুরের মাঠ খুব একটা বড় নয়। ফলে ছক্কা মারতে সমস্যা হচ্ছিল না রিকেলটনের। তাঁর ব্যাট থেকে তিনটি ছক্কা এল। রোহিত অবশ্য সকলকে অবাক করে দেন। কোনও ছক্কা মারেননি তিনি। তাঁর ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল, হাওয়ায় শট খেলার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
দুই ব্যাটারের মধ্যে ১১৬ রানের জুটি হয়। দু’জনেই অর্ধশতরান করেন। দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে আউট হন রিকেলটন। ৩৮ বলে ৬১ রান করেন তিনি। সাতটি চার ও তিনটি ছক্কা মারেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের ওভারেই রাজস্থানের অধিনায়ক রিয়ান পরাগের বলে আউট হন রোহিত। ৯টি চারের সাহায্যে ৩৬ বলে ৫৩ রান করেন তিনি। ওই এক বারই ছক্কা মারার চেষ্টা করেছিলেন রোহিত। পারেননি। আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
উইকেট পড়লেও মুম্বইয়ের রান তোলার গতি কমতে দেননি সূর্য ও হার্দিক। সূর্য প্রথম থেকেই বড় শট মারছিলেন। হার্দিক তখন কিছুটা চুপ ছিলেন। কিন্তু কত ক্ষণ হার্দিককে শান্ত রাখা যাবে। ফজলহক ফারুকির এক ওভারে হাত খুললেন তিনি। জয়পুরের মাঠে দর্শক হিসাবে ছিলেন ইংল্যান্ডের ফুটবল দলের প্রাক্তন কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। রাজস্থানের জার্সি পরেছিলেন তিনি। অর্থাৎ, রাজস্থানকে সমর্থন করছিলেন সাউথগেট। কিন্তু রাজস্থানের বোলারেরা তাঁর মুখে বিশেষ হাসি ফোটাতে পারলেন না।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান করল মুম্বই। সূর্য ও হার্দিক দু’জনেই ২৩ বল খেলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকলেন। মুম্বইয়ের ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছে কতটা আত্মবিশ্বাসী তারা। ফেরারির গতিতে ছুটতে শুরু করেছেন রোহিত, হার্দিক, সূর্যেরা। কোনও ধুলোঝড় থামাতে পারছে না তাঁদের।