মহম্মদ সিরাজ (বাঁ দিকে) এবং শ্রেয়স আয়ার। — ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় বোর্ড। ১৫ জনের দল বেছে নিয়েছে তারা। সেই দলে যাঁরা সুযোগ পেয়েছেন তাঁদের থেকেও বেশি আলোচনা হচ্ছে যাঁরা সুযোগ পাননি তাঁদের নিয়ে। যশস্বী জয়সওয়াল এবং শ্রেয়স আয়ারকে নিয়ে আলোচনা চলছে সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি, দৌড়ে থাকলেও বাদ পড়েছেন আরও অনেকে। সে রকমই উপেক্ষিত ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রথম একাদশ সাজানোর চেষ্টা করল আনন্দবাজার ডট কম।
যশস্বী জয়সওয়াল
নিঃসন্দেহে উপেক্ষিতদের তালিকায় প্রথম নাম। স্ট্যান্ডবাইয়ের দলে রয়েছেন বটে। কিন্তু সেখানে থাকা আর না থাকা সমান। কারণ মূল দলের ওপেনারদের মধ্যে কেউ চোট পেলে বিকল্প রয়েছে। ফলে যশস্বীর ডাক আসবে না বললেই চলে। অথচ আইপিএলে যথেষ্ট ভাল ফর্মে ছিলেন যশস্বী। ১৪ ম্যাচে ৫৫৯ রান করেছেন। ছ’টি অর্ধশতরান রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে যা অবস্থা, তাতে ওপেনিংয়ে কোনও জায়গা নেই জাতীয় দলে।
সাই সুদর্শন
যশস্বীর মতোই কপাল চাপড়ানোর দশা সুদর্শনেরও। গত আইপিএলে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন। সেই সুবাদে টেস্ট দলে সুযোগ পেয়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে খেলেও এলেন। কিন্তু যে ফরম্যাটে সবচেয়ে ভাল খেলেন সেই টি-টোয়েন্টিতেই জায়গা পাচ্ছেন না। সমস্যা একই, তিনি ওপেনার। দলের প্রয়োজনে নীচের দিকে খেলতে হলেও কতটা স্বচ্ছন্দ হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। আইপিএলে ১৫ ম্যাচে ৭৫৯ রান করেছিলেন সুদর্শন।
শ্রেয়স আয়ার
বাদ পড়াদের মধ্যে সবচেয়ে চর্চিত নাম। কিছু দিন আগেই বলা হচ্ছিল শ্রেয়সের সব ফরম্যাটের দলে ঢোকা সময়ের অপেক্ষা। অথচ এশিয়া কাপের দলে তাঁকে নেওয়াই হল না! আইপিএলে ১৭ ম্যাচে ৬০৪ রান রয়েছে। পঞ্জাব কিংসকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলেছেন। তার আগের বার কেকেআরকে ট্রফি জিতিয়েছেন। উপেক্ষিতদের একাদশে তিনিই অধিনায়ক।
কেএল রাহুল
আইপিএলে আর এক ধারাবাহিক ক্রিকেটার। শুধু গত মরসুম নয়, গত কয়েক বছর ধরেই তিনি নিয়মিত টি-টোয়েন্টিতে রান করছেন। সে যে দলেই খেলুন না কেন। গত আইপিএলেও ৫০০-র উপর রান রয়েছে দিল্লির হয়ে। তাঁকে না নেওয়ার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি নির্বাচকদের তরফে।
ধ্রুব জুরেল
রাজস্থান রয়্যালসের ক্রিকেটারও স্ট্যান্ডবাই তালিকায় রয়েছেন। তাঁরও মূল দলে ঢোকার সম্ভাবনা কম। উপেক্ষিতদের দলে তিনি থাকবেন মূলত উইকেটকিপার হিসাবে। তবে রাজস্থানে যেমন করেন, তেমনই দলের দরকারে ব্যাট হাতে কার্যকর ভূমিকাও নিতে পারেন।
এশিয়া কাপের ব্রাত্য ভারতীয় একাদশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রিয়ান পরাগ
রাজস্থানের হয়ে দুটো মরসুম ভাল খেলার কারণে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। আহামরি কিছু করে দেখাতে পারেননি। তাই এশিয়া কাপের মূল দলে সুযোগ পাবেন এমন আশাও কেউ করেননি। তবে উপেক্ষিতদের দলে রিয়ান নিশ্চিত ভাবেই থাকবেন।
নীতীশ রেড্ডি
এখন তিনি চোট সারাতে ব্যস্ত। তবে সুস্থ থাকলেও মূল দলে সুযোগ হয়তো পেতেন না। আইপিএল খেলেই উঠে আসা নীতীশের। টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি দলেই নিয়মিত নন।
ওয়াশিংটন সুন্দর
তামিলনাড়ুর স্পিনার কী করতে পারেন, সেটা ইংল্যান্ডে বোঝা গিয়েছে। দরকারে উইকেট যেমন এনে দিতে পারেন, তেমনই ক্রিজ় কামড়ে পড়ে থাকতে পারেন। আবার টি-টোয়েন্টির চাহিদা অনুযায়ী, বোলারদের মাঠের বাইরে ফেলতে পারেন। এককথায় ‘ইউটিলিটি ক্রিকেটার’। তিনিও এশিয়া কাপে ব্রাত্য।
মহম্মদ সিরাজ
ইংল্যান্ড সফরে পাঁচটা টেস্টেই খেলেছেন। সবচেয়ে বেশি বল করেছেন এবং উইকেট নিয়েছেন। তাঁকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্যই এশিয়া কাপে নেওয়া হয়নি বলা হচ্ছে। তবে ১৫ জনের দলে নেওয়া যেতেই পারত। উপেক্ষিতদের দলে নিশ্চিত ভাবেই থাকবেন সিরাজ।
মহম্মদ শামি
বাংলার পেসারেরও চোট রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সে কারণেই এশিয়া কাপের দলে নেওয়া হয়নি কি না তা জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন মহল থেকে শোনা যাচ্ছে, বয়স এবং ফিটনেসের কারণে তাঁকে আর টি-টোয়েন্টিতে ভাবছে না বোর্ড। যদি খেলেন তা হলে হয়তো শুধুই এক দিনের ক্রিকেটে খেলতে পারেন।
রবি বিষ্ণোই
বছর দুয়েক আগেও ভারতের টি-টোয়েন্টির দলে নিয়মিত ছিলেন। আচমকাই মূলস্রোত থেকে কিছুটা দূরে চলে গিয়েছেন রবি। সম্ভবত ফর্মের কারণেই আর তাঁর কথা ভাবা হচ্ছে না।