দুরন্ত এনরিকে-কোলাদো

খেতাবের স্বপ্ন বেঁচে থাকল ইস্টবেঙ্গলের

যুবভারতীতে আগের ম্যাচে আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে লেফ্ট ব্যাক পজিশনে মনোজ মহম্মদকে খেলিয়ে ডুবেছিলেন মেনেন্দেস। এ দিন কমলপ্রীত সিংহকে ফেরাতেই বন্ধ হয়ে গেল ডান প্রান্ত দিয়ে রিয়াল কাশ্মীরের আক্রমণ ওঠার পরিকল্পনা। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৬
Share:

সেরা: রিয়াল কাশ্মীরের রক্ষণ ভেঙে এগোচ্ছেন এনরিকে। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। এআইএফএফ

রিয়াল কাশ্মীর ১ • ইস্টবেঙ্গল ২

Advertisement

খেতাবি দৌড়ে হারিয়ে যেতে যেতে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। কিন্তু আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জটিল অঙ্কের ধাক্কায় ইস্টবেঙ্গল শিবির থেকে উধাও উচ্ছ্বাস। আজ, শুক্রবার চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে জিতলেই যে খেতাব চেন্নাই সিটি এফসি-র। মাঠের বাইরের অঙ্কে শেষ পর্যন্ত কী হবে তা সময়ই বলবে। তবে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার নিখুঁত অঙ্কে বেঁচে থাকল ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ জয়ের আশা। আর শেষ হয়ে গেল রিয়াল কাশ্মীরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন।

প্রথম একাদশে কমলপ্রীত

Advertisement

যুবভারতীতে আগের ম্যাচে আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে লেফ্ট ব্যাক পজিশনে মনোজ মহম্মদকে খেলিয়ে ডুবেছিলেন মেনেন্দেস। এ দিন কমলপ্রীত সিংহকে ফেরাতেই বন্ধ হয়ে গেল ডান প্রান্ত দিয়ে রিয়াল কাশ্মীরের আক্রমণ ওঠার পরিকল্পনা।

জনি আকোস্তার প্রত্যাবর্তন

কোস্টা রিকার হয়ে দু’টো বিশ্বকাপ খেলা ডিফেন্ডারের লাল-হলুদ জার্সিতে শুরুটা একেবারেই স্বস্তিদায়ক ছিল না। দল গোল খেলেই কাঠগড়ায় তোলা হত তাঁকে। জনি না খেললে যে কী হয়, তা আইজল ম্যাচেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল। রক্ষণকে সাহায্য করতে লালরিনডিকা রালতে ও কাশিম আইদারা বারবার নীচে নেমে যাওয়ায় মাঝমাঠের ছন্দ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কার্ড সমস্যা কাটিয়ে এ দিন জনি দলে ফিরতেই ছবিটা বদলে গেল। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারের কাছে আটকে যাওয়ার হতাশা থেকেই ২৮ মিনিটে মাথা গরম করে লাল কার্ড দেখেন রিয়াল কাশ্মীরের স্ট্রাইকার আবেদনেদো কোফি।

এনরিকে-কোলাদো যুগলবন্দি

প্রথমার্ধেই ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন দুই তারকা। ২০ মিনিটে লালডানমাওয়াইয়ার সেন্টারে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন এনরিকে এসকুয়েদা। ৪৩ মিনিটে তাঁর পাস থেকেই গোল খাইমে সান্তোস কোলাদোর। জবি জাস্টিনের অভাব বুঝতেই দিলেন না তাঁরা।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে অদ্ভুত ভাবে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। দশ জনে খেলা রিয়াল কাশ্মীরের আক্রমণের ঝড়ের সামনে অসহায় দেখাচ্ছিল বোরখা গোমেস পেরেস-দের। এই পরিস্থিতিতে ৬৭ মিনিটে ফের গোলরক্ষক রক্ষিত ডাগারের ভুলে বিপর্যয় লাল-হলুদ শিবিরে। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল ধরতে গিয়ে রিয়াল কাশ্মীর মিডফিল্ডার বাজি আর্মান্দের ঊরুতে ঢুসো মারেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। গোল করে অ্যারন কাটেবি শুধু ব্যবধান কমাননি, লাল-হলুদ শিবিরে আতঙ্কও ছড়িয়ে দেন। আর এক বার কাশিমের দুর্বল ব্যাকপাস গোলরক্ষকের কাছে পৌঁছনোর আগেই ধরে নেন মেসন লি রবার্টসন। তাঁর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে এ দিনই শেষ হয়ে যেত ইস্টবেঙ্গলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা। উত্তেজনায় চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়েন মেনেন্দেস। তাঁর উদ্বেগ আরও বাড়ালেন বোরখা। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট তিনেক আগে হলুদ কার্ড দেখায় খেলতে পারবেন না মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে পরের ম্যাচে।

রিয়াল কাশ্মীর বনাম ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগরে এই খেলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রবল তুষারপাতের জেরে স্থগিত হয়ে যায় তা। ২৮ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হয় ম্যাচ। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কাশ্মীরের অগ্নিগর্ভ পরিবেশ। এ বার ম্যাচের কেন্দ্রই বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। ঠিক হয় নয়াদিল্লিতে খেলা হবে। যদিও দুরন্ত এক্সপ্রেস দেরি করায় লাল-হলুদ সমর্থকেরা সময় মতো দিল্লি পৌছতে পারেননি। ম্যাচ দেখতে না পারার যন্ত্রণা তাঁরা ভুললেন প্রিয় দলের জয়ের খবর শুনেই!

রিয়াল কাশ্মীর: বিলাল হোসেন খান, ধর্মরাজ রাবনন, মেসন লি রবার্টসন, লাভডে ওকেচুকু, আভাস থাপা, দানিশ ফারুক, অ্যারন কাটেবি, বাজি আর্মান্ড (গ্নোয়েরে ক্রিজ়ো), খাইদেম মিতেই (ঋত্বিক দাস), সুরচন্দ্র সিংহ (ফারহান গনি) ও আবেদনেদো কোফি।

ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত ডাগার, লালরাম চুলোভা, জনি আকোস্তা, বোরখা গোমেস পেরেস, কমলপ্রীত সিংহ, লালডানমাওয়াইয়া রালতে (সিয়াম হাঙ্গাল), লালরিনডিকা রালতে, কাশিম আইদারা (সালামরঞ্জন সিংহ), ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা, খাইমে সান্তোস কোলাদো (টোনি দোভাল) ও এনরিকে এসকুয়েদা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন