East Bengal vs Mohun Bagan

কলকাতা লিগে ডার্বির রং লাল-হলুদ, পাঁচ গোলের ম্যাচে মোহনবাগানকে হারাল ইস্টবেঙ্গল

মরসুমের প্রথম কলকাতা ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগে কল্যাণী স্টেডিয়ামে মোহনবাগানকে ৩-২ গোলে হারাল তারা। দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে সমতা ফেরালেও জিততে পারল না সবুজ-মেরুন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩৭
Share:

গোলের পর সায়নের উচ্ছ্বাস। ছবি: সমাজমাধ্যম।

ইস্টবেঙ্গল ৩ (জেসিন, সায়ন, ডেভিড)
মোহনবাগান ২ (কাস্টানহা, কিয়ান)

Advertisement

মরসুমের প্রথম কলকাতা ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগে কল্যাণী স্টেডিয়ামে মোহনবাগানকে ৩-২ গোলে হারাল তারা। দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে সমতা ফেরালেও জিততে পারল না সবুজ-মেরুন। উল্টো দিকে, ইস্টবেঙ্গল সহজ সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে অনেক বেশি ব্যবধানে জেতা উচিত ছিল তাদের। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেছেন জেসিন টিকে, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেভিড লালানসাঙ্গা। মোহনবাগানের দু’টি গোল লিয়ন কাস্টানহা এবং কিয়ান নাসিরির।

খেলার শুরু থেকে দু’পক্ষই একে অপরকে মেপে নেওয়ার কৌশল নিয়ে নেমেছিল। আক্রমণের শুরুটা হয়েছিল কিয়ান নাসিরির হাত ধরে। বাঁ দিক থেকে ইস্টবেঙ্গল বক্সে ঢোকার চেষ্টা করলেও তাঁকে ট্যাকল করা হয়। ৯ মিনিটে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এডমুন্ড লালরিনডিকা এবং সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় একে অপরের সঙ্গে পাস খেলে এগিয়ে যান। এর পর সায়ন পাস দেন ফাঁকায় থাকা জেসিনকে। গোলে বল ঠেলতে ভুল করেননি ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক।

Advertisement

গোল হজম করার পরেও দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা ছাড়েননি মোহনবাগানের সমর্থকেরা। তবে কল্যাণী স্টেডিয়ামে তাঁদের গলা ছাপিয়ে লাল-হলুদ সমর্থকদের চিৎকারই বেশি শোনা যাচ্ছিল। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যাওয়ার পর দু’দলের মাঝমাঠে লড়াই হতে থাকে। সায়নের একটি প্রয়াস আটকে দেয় মোহনবাগান। দু’মিনিট পরে কিয়ানের প্রয়াসও ব্যর্থ হয়।

ধীরে ধীরে খেলায় নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগান মূলত আটকেছিল নিজেদের অর্ধেই। এডমুন্ডের একটি শট বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। ৩১ মিনিটে পোস্টে শট মারেন কিয়ান। সুহেলের পায়ে বল গিয়েছিল। কিন্তু রিসিভ করার পর বলটি কিছুটা এগিয়ে যায়। ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার সেটি ক্লিয়ার করলেও বিপন্মুক্ত করতে পারেননি। বল যায় কিয়ানের পায়ে। জায়গায় রাখার বদলে তিনি জোরে শট নিতে যান। বল লাগে পোস্টে।

এর পর হঠাৎই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। মোহনবাগানের অধিনায়ক সন্দীপ মালিকের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের ডেভিডের ধাক্কাধাক্কি হয়। সমর্থকেরাও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। যদি রেফারি এসে দু’দলের খেলোয়াড়দের আলাদা করে দেন। এর পর ইস্টবেঙ্গলের বিক্রমের সঙ্গে বল কাড়ার লড়াইয়ে চোট পান মোহনবাগানের সালাউদ্দিন। তাঁকে তুলে নিয়ে দোরজি তামাংকে নামান মোহনবাগান কোচ ডেগি কার্ডোজ়‌ো।

বিরতির আগে দু’দলই সুযোগ পেয়েছিল গোল করার। প্রভাত লাকরার থেকে বল কাড়তে না পেরে মাথা গরম করেন সুহেল। ছুটে আসেন দীপেন্দু বিশ্বাস এবং এডমুন্ড। দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন প্রভাতও। দু’দলের খেলোয়াড়েরাই ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। যদিও সে সময় রেফারি কাউকে কার্ড দেখাননি।

সংযুক্তি সময়ে একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ডেভিড। মোহনবাগানের ফুটবলারের ভুল পাস পেয়ে গিয়েছিলেন ডেভিড। বিপক্ষ গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। তবে ইস্টবেঙ্গলের গোল হতে সময় লাগেনি। মোহনবাগান একটি কর্নার পেয়েছিল। তা ক্লিয়ার হওয়ার পর বল পান এডমুন্ড। মোহনবাগানের অর্ধে তখন শুধু দীপেন্দু। বাকি দল ছিল ইস্টবেঙ্গলের অর্ধে। এডমুন্ড পাস দেন ফাঁকায় থাকা সায়নকে। গোলকিপারকে কাটিয়ে গোল করেন সায়ন।

তখনও বোঝা যায়নি মোহনবাগান দ্বিতীয়ার্ধে এ ভাবে ফিরে আসতে পারবে ম্যাচে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা। দোরজি এবং করণ রাই গোল করার কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। ৫৫ মিনিটে গোল করেন লিয়ন কাস্টানহা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল নামিয়ে দেন দীপেন্দু। দেবজিতের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল গলিয়ে গোল করেন কাস্টানহা।

গোল পেয়ে আক্রমণ আরও বাড়িয়ে দেয় মোহনবাগান। সেই সময় বল প্রায় ধরতেই পারছিল না ইস্টবেঙ্গল। একচ্ছত্র দাপট ছিল মোহনবাগানের। ৬৭ মিনিটে সমতা ফেরায় তারা। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন কিয়ান।

ইস্টবেঙ্গল উত্তর দিতে দু’মিনিট সময় নেয়। ডান দিক থেকে বেশ খানিকটা ছুটে এসে আমন সিকে ক্রস রেখেছিলেন বক্সের মাঝে। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ডেভিড সময় নিয়ে হেড করে বল গোলে ঢোকান। তাঁকে কেউ মার্ক করেননি। জার্সি খুলে উচ্ছ্বাস করে হলুদ কার্ডও দেখেন ডেভিড। ৮৩ মিনিটে এত সহজ সুযোগ যে মিস্‌ করবেন তা কেউ ভাবতে পারেননি। এক দম ফাঁকায় পাস পেয়েছিলেন। সামনে গোলকিপার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। অবিশ্বাস্য ভাবে সেই বল বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন তিনি।

শেষ দিকে মোহনবাগান বেশ কিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। খারাপ ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখেন ইস্টবেঙ্গলের আমন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement