Sandip Nandy Controversy in East Bengal

সন্দীপ নন্দী বিতর্কে ‘নেতা’ ব্রুজ়োর পাশেই ইস্টবেঙ্গল, সন্দীপ বললেন, পদত্যাগ তো করিনি!

বু‌ধবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সাংবাদিক বৈঠকের পর সন্দীপ নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখনও পদত্যাগই করেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩০
Share:

(বাঁ দিকে) অস্কার ব্রুজ়ো ও সন্দীপ নন্দী (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।

সন্দীপ নন্দী বিতর্কে প্রথম মুখ খুলল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা জানিয়ে দিল, প্রধান কোচ অস্কার ব্রুজ়োর উপরেই তাদের আস্থা রয়েছে। তিনিই দলের ‘নেতা’। তিনিই দল চালাবেন। সন্দীপ জানিয়েছেন, তিনি এখনও ইমামি ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক-কোচের পদ থেকে পদত্যাগই করেননি!

Advertisement

বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার জানিয়ে দেন, কোচের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁদের। দেবব্রত বলেন, “বরাবর কোচের নেতৃত্বেই আমাদের দল চলে। আগামী দিনেও সেটা হবে। কোচের উপর পূর্ণ আস্থা রাখছি। অতীতেও সেই আস্থা ছিল। এখনও আছে। আমাদের দলে নেতৃত্ব একটাই। অস্কার ব্রুজ়ো। অন্য কোনও নেতৃত্ব নেই। তাঁর হাতে দল। তিনি যেটা করবেন, সেটাই ফাইনাল।”

মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমের পাতায় ইস্টবেঙ্গল জানিয়ে দিয়েছিল, গোলরক্ষক-কোচ সন্দীপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তারা। বিবৃতিতে লেখা হয়েছিল, “ইস্টবেঙ্গল ও গোলরক্ষক-কোচ সন্দীপ নন্দী পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। ফুটবলার ও কোচ হিসাবে সন্দীপের অবদানের জন্য ক্লাব তাঁকে সম্মান জানায়।” বুধবার দেবব্রত জানিয়েছেন, তিনি আশাবাদী এই সমস্যার সমাধান হবে। দেবব্রত বলেন, “ফুটবল পেশাদার খেলা। বিশ্ব ফুটবলে অনেক জায়গায় এই ধরনের ঘটনা ঘটে। আবার নিজে থেকেই তার সমাধান হয়ে যায়। এখানেও তাই হবে।”

Advertisement

সন্দীপকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে ইস্টবেঙ্গলের বিবৃতির স্ক্রিনশট। ছবি: ফেসবুক।

এই বৈঠকের পরেই আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল সন্দীপের সঙ্গে। ক্লাব তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা বললেও সন্দীপ স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। সন্দীপ বললেন, “আমি পদত্যাগ করিনি। আমি এখনও ইমামি ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক-কোচ। আমি শুধু বলেছি, এই কোচের সঙ্গে কাজ করব না। কারণ, উনি আমাকে সকলের সামনে অপমান করেছেন। আমি কোথাও পদত্যাগ পত্র দিইনি। আমি ক্লাবের ভাল চাই। সেই কারণেই যুক্ত হয়েছিলাম। আগামী দিনেও ক্লাবের ভাল চাইব। আমি শুধু বলেছি, এই কোচের সঙ্গে কাজ করব না। তাই এখন আমি ইস্টবেঙ্গল থেকে বিরত রয়েছি। সুপার কাপের পর আমি কথা বলব।”

সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, ক্লাব থেকে সন্দীপকে আর কোথাও কোনও বিবৃতি দিতে বারণ করা হয়েছে। সুপার কাপের আগে এই ঝামেলা (যার জন‍্য ক্লাব মনে করছে সন্দীপই দায়ী) কোনও কর্তাই চাইছেন না। ইনভেস্টর ইমামিও গোটা ঘটনায় বিরক্ত।

ঘটনার সূত্রপাত আইএফএ শিল্ড ফাইনালের পর। টাইব্রেকারে মোহনবাগানের কাছে শিল্ড ফাইনাল হারে ইস্টবেঙ্গল। ১২০ মিনিট প্রভসুখন গিল গোলকিপিং করলেও টাইব্রেকারের আগে তাঁকে তুলে নামানো হয় দেবজিৎ মজুমদারকে। তাতে লাভ হয়নি। খেলা শেষে ব্রুজ়ো জানান, তাঁর সহকারী কোচেরা গোলরক্ষক বদলের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেটা শোনা তাঁর উচিত হয়নি। পরে জানা যায়, সুপার কাপ খেলতে গোয়া যাওয়ার পর সন্দীপকে ‘অপমান’ করেছেন ব্রুজ়ো। ফলে কলকাতায় ফিরে আসেন সন্দীপ। জানা যায়, ইস্টবেঙ্গলের গোলরক্ষক-কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।

কোচের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সন্দীপ। তিনি জানান, শিল্ড ফাইনালে হারের জন্য কোচের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্রুজ়ো সকলের সামনে তাঁকে কথা শোনান। ব্রুজ়ো ইস্টবেঙ্গলকে ধ্বংস করছেন বলেও অভিযোগ করেন ভারতের জাতীয় দলে খেলা প্রাক্তন গোলরক্ষক। তিনি আরও জানান, সুপার কাপের পর বিষয়টি নিয়ে এগোবেন তিনি। আপাতত ইস্টবেঙ্গলের কথা ভেবে চুপ থাকছেন।

সন্দীপের এই আচরণ ভাল ভাবে নেয়নি ইমামি। সংস্থার কর্তা আদিত্য আগরওয়াল পাল্টা সন্দীপের সামনেই প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, “এত দিন যদি এত সমস্যা ছিল সন্দীপের, তাহলে কেন উনি আগে এই সমস্যার কথা জানাননি? কাউকে নিয়েই আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা কাজ করতে চাই। ফুটবলের উন্নতি করতে চাই। এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” তার পরেও বিতর্ক থামছে না। তা বেড়েই চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement