বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা শেষে ভারতের তিরন্দাজেরা। ছবি: এক্স।
বাংলাদেশে এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে গিয়েছিলেন ভারতের তিরন্দাজেরা। সেখানে গিয়ে সমস্যায় পড়েন তাঁরা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ও তার জেরে দেশে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তার মাঝে পড়ে সমস্যায় ভারতের ২৩ তিরন্দাজ। সারারাত কষ্ট করে কাটাতে হয় তাঁদের।
প্রতিযোগিতায় পদকের তালিকায় শীর্ষে শেষ করে ভারত। ১০টি পদক জেতেন ভারতীয় তিরন্দাজেরা। প্রতিযোগিতার শেষে ঢাকা থেকে বিমানে দিল্লি ফেরার কথা ছিল ভারতীয় দলের। কিন্তু বিমান বাতিল করা হয়। ফলে সারারাত কষ্টের মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয়েছে খেলোয়াড়দের। প্রায় ১০ ঘণ্টা বিমানবন্দরেই কাটাতে হয় তাঁদের। যে বিমানে তাঁদের টিকিট ছিল তা বাতিল হয়। অন্য কোনও বিমানের ব্যবস্থাও করা যায়নি।
ভারতীয় দলে অভিষেক বর্মা, জ্যোতি সুরেখার মতো সিনিয়র তিরন্দাজ ছিলেন। অলিম্পিক্সে খেলা দীপিকা কুমারী, ধীরজ বোম্মাদেভারাও গিয়েছিলেন বাংলাদেশের। শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁদের বিমান ছিল। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পর তাঁদের জানানো হয়, দিল্লিগামী সেই বিমান বাতিল করা হয়েছে। রাত ২টো পর্যন্ত বিমানবন্দরেই তাঁদের অপেক্ষা করতে হয় বলে খবর।
বিমানবন্দর থেকে বার হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা একটি বাসে চেপে হোটেলে যেতে হয় তাঁদের। সেই বাসে কোনও জানলা ছিল না। একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তিরন্দাজদের। অভিষেক জানিয়েছেন, সেটি আদতে একটি ধর্মশালা ছিল। সংবাদ সংস্থাকে অভিষেক বলেন, “আমাদের যে ধর্মশালায় রাখা হয়েছিল, সেটা খুব নোংরা ছিল। একটা ঘরে ছ’জন মহিলাকে থাকতে হয়েছিল। তাদের জন্য একটাই শৌচাগার ছিল। সেটাও খুব নোংরা ছিল। আমার মনে হয় না, কেউ ওখানে স্নান করেছিল।”
তাঁরা নিজেরা কোনও বন্দোবস্ত করতে পারেননি। কারণ, বাংলাদেশে কোনও ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড কাজ করছিল না। অভিষেক বলেন, “আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম, নিজেরাই ব্যবস্থা করে নেব। কিন্তু আমাদের কারও ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড কাজ করছিল না। যদি জানতাম যে, সকাল ১১টার মধ্যে বিমান ধরতে পারব, তা হলে হয়তো বিমানবন্দরেই রাত কাটিয়ে দিতাম। কিন্তু সেটাও আমাদের কেউ জানায়নি।”
পরের দিন সকাল ৭টায় আবার বিমানবন্দরে পৌঁছে যান ভারতীয় তিরন্দাজেরা। তার পরেও বিমান ধরতে সময় লাগে তাঁদের। বাংলাদেশ থেকে বিমান ধরতে দেরি হওয়ায় দিল্লিতে নেমে নিজের নিজের শহরের বিমান ধরতে সমস্যায় পড়েন তাঁরা। অনেককে দ্বিতীয় বার বিমানের টিকিট কাটতে হয়। কিন্তু তার জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ ভারতীয় তিরন্দাজদের।