বছর চারেক পরে মুম্বই ম্যাচের শেষে শাহরুখ খান আবার হাসলেন। ঘরের মাঠে মরসুমের শেষ ম্যাচ খেলে নাইটদের নিয়ে ইডেন ঘুরলেন, চুমু ছুড়ে দিলেন দর্শকদের দিকে। অবশেষ জয়ে ফিরল কেকেআর। ঠিক কোন জায়গায় মুম্বইকে মাত দিল নাইটরা? দেখে নেওয়া যাক।
কেকেআরের বড় স্কোর গড়ে তোলাটাই এতদিন ‘মিসিং’ ছিল। ইডেন এ বার সাক্ষী থাকল বড় স্কোরের, এখানেই রোহিত শর্মার মুম্বইয়ের চেয়ে এগিয়ে যায় নাইটরা।
হারের ডাবল হ্যাটট্রিকের পরে অবশেষে জয়। ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পেয়ে নাইটরা এখন পাঁচ নম্বরে। এর মূল কাণ্ডারী সেই আন্দ্রে রাসেল। ৪০ বলে অপরাজিত ৮০ রান করলেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ছ’টি চার, আটটি ছয়।
নাইটদের ব্যাটিং অর্ডারই এ দিন প্রমাণ করে দিল, এত দিন কোথায় গলদ থেকে যাচ্ছিল। ব্যাটিং অর্ডারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে রাসেলকে তিন নম্বরে নামানোয় শাপমুক্তি ঘটল তাঁদের। রাসেল শুরুটা অন্য দিনের চেয়ে একটু মন্থর গতিতে করলেন।
অন্য দিকে এক রানের মাথায় আন্দ্রে রাসেলের ক্যাচ ফেললেন তাঁরই স্বদেশীয় এভিন লুইস। সেই ক্যাচ মিস হওয়াটাই কেকেআরের জয়ের একটা টার্নিং পয়েন্ট।
৩.৩ ওভারে রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরে হয়তো সব আশাই শেষ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই শিবিরের।
৩৪ বলে ৯১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন হার্দিক পাণ্ড্য, কিন্তু তিনি ছাড়া মুম্বইয়ের আর কেউ বেশি ক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি এদিন।
শুভমন গিল ওপেন করতে নেমে জাত চেনালেন। ৪৫ বলে ৭৬ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন নাইটদের। তাঁর ইনিংসই রাসেলকে হাত খোলার রাস্তা করে দেয়।
রাসেলের সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন গিল। এই জুটিই ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়ায় মুম্বইয়ের।
দ্রুত রান তুলতে পারছেন না, স্ট্রাইক রেটে সমস্যা এ সব অভিযোগ উড়িয়ে রবিবার ২৯ বলে ৫৪ রান করলেন ক্রিস লিন। অন্য দিকে, মুম্বইয়ের ওপেনার কুইন্টন ডি’কক শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন।
আইপিএলের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের সামনে এ বারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান করল কেকেআর। রাসেল-গিল জুটির সামনে মুম্বইয়ের পেসাররা দাঁড়াতেই পারেননি রবিবারের ম্যাচে। লাসিথ মালিঙ্গা বা বুমরাহ, কেউই সে ভাবে রাসেল ঝড়ের সামনে মাথা তুলতে পারেননি।
ব্যাটে তো বটেই, বলেও দক্ষতা দেখালেন রাসেল। বল হাতে এ দিনের ম্যাচে রাসেল এভিন লুইস ও সূর্যকুমার যাদবের উইকেট তুলে নেন।
সুনীল নারাইন প্রমাণ করলেন বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখানো যায়, তিনি প্রথমেই ডি কককে ফিরিয়ে মুম্বই শিবিরে ধাক্কা দেন। ক্রিজে থিতু হওয়া কিয়েরন পোলার্ডকে ফিরিয়ে দেন তিনি।
হ্যারি গার্নিও এ দিন প্রমাণ করলেন নিজেকে। ১২ রানে ফেরালেন রোহিত শর্মাকে। মহামূল্যবান হার্দিক পাণ্ড্যর উইকেটও নিলেন গার্নি।
ব্যাটিং সহায়ক পিচে এগিয়ে যায় কেকেআর। ইডেনের এই বাইশ গজ সম্ভবত এ বারের আইপিএলের সেরা ব্যাটিং উইকেট। রবিবার ম্যাচের শুরুতে দেখা গেল পিচ একেবারে ন্যাড়া। পেসাররা নতুন বলও মুভ করাতে পারলেন না।