সফল: তিন উইকেট বাংলার পেসার বি. অমিতের। ফাইল চিত্র
এক দিক থেকে ঈশান পোড়েলের নিখুঁত লাইন ও লেংথ, অন্য দিক থেকে বি অমিতের রিভার্স সুইং। বাংলার দুই তরুণের আগ্রাসী পেস বোলিংয়ে বেশ চাপে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন গুজরাত। বাংলার ৩৫৪ রানের জবাবে পার্থিব পটেলরা দিনের শেষে ছ’উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান। হাতে মাত্র চার উইকেট। ১৭৪ রানে পিছিয়ে তারা।
রঞ্জি ট্রফি কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় দিন শেষ বেলায় পার্থিব পটেলরা ৫৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে সমস্যায় পড়ে যান। এর মধ্যে তিনটি উইকেটই নেন বি অমিত। দিনের শেষে ইশান পোড়েলও দু’উইকেট নেন ৫৫ রান দিয়ে।
গুজরাতের মিডল অর্ডারে ধস নামানোর আগে এ দিন ব্যাট হাতে নেমেও সফল হন এ শহরের তামিল পরিবারজাত ২৯ বছর বয়সি অলরাউন্ডার বোড্ডুপল্লি অমিত। আমির গনির সঙ্গে পার্টনারশিপে দলের স্কোরবোর্ডে যে ৫৮ রান যোগ করেন, সেটাই বাংলাকে তিনশোর গণ্ডী পার করিয়ে দেয়। অন্য দিকে গনির এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও বাংলাকে যে সাড়ে তিনশোর ওপরে নিয়ে যান, এটাই গুজরাতের ওপর মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়।
একসময় ৫৯-৪ ছিল যে দলটা, ৩৫৪-য় ইনিংস শেষ করে লড়াকু মানসিকতারই প্রমাণ দেয় এ দিন। অশোক ডিন্ডা ও ঈশান পোড়েল বোলিং শুরু করার পরেও বোঝা যায় বাংলা কতটা মরিয়া। যখন তাঁরা গুজরাতের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন ১৭ রানের মধ্যে। এ দিন অমিত জয়পুর থেকে বলেন, ‘‘আমরা লাঞ্চের পরে ঠিক করেছিলাম এক দিক থেকে রান আটকাবো আর অন্য দিক থেকে উইকেট ফেলার চেষ্টা করব।’’
দ্বিতীয় সেশনে বাংলার বোলারদের এই পরিকল্পনা প্রায় ভেস্তে দেন পার্থিব পটেল ও ভার্গব মেরাইয়ের জুটি। তাঁদের ১০৭ রানের পার্টনারশিপই বাংলাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু চায়ের বিরতির পরেই যে পোড়েলের বলে হাফ সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থাকা পার্থিব পটেল স্টাম্পের পিছনে শ্রীবৎস গোস্বামীর গ্লাভসে ধরা পড়ে যান, তার পরেই গুজরাতের ব্যাটিংয়ে ধস নামা শুরু।
আইপিএলে খেলা মনপ্রীত জুনেজাকে (১০) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলার এক বল পরেই ক্রিজে জমে যাওয়া প্রথম শ্রেণির অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মেরাইয়ের স্টাম্প ছিটকে দেন অমিত। সেই ওভারেই শেষ বলে আবার বিপক্ষ শিবিরে আঘাত হানেন তিনি। লিগ পর্যায়ে দুটো বড় ইনিংস খেলে আসা চিরাগ গাঁধী তাঁর আউট সুইঙ্গারে বিভ্রান্ত হয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান। পরপর এই তিন ধাক্কায় গুজরাতের অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যায়। যাকে স্থিতিশীল করার জন্য আপাতত ক্রিজে রয়েছেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পীযূয চাওলা ও রুজুল ভট্ট। ৪৬ রানে তিন উইকেট পাওয়া বি অমিত ও ঈশানকে যাঁদের সামলাতে হবে শনিবার সকালে।
শনিবার সকালটাই এই ম্যাচের ফলাফলের ইঙ্গিত দিতে পারে বলে ধারণা বাংলার পেস বোলার অলরাউন্ডারের। বলেন, ‘‘উইকেট বেশ শক্ত আর স্পোর্টিং। লাইন-লেংথ বজায় রেখে পরিশ্রম করে বল করতে পারলে উইকেট তোলা যায় এখানে।’’ অমৃতসরে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে দুই ইনিংসে পাঁচ ও ছ’উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন যথাক্রমে অমিত ও ঈশান। তাঁদের সেই আগ্রাসন ফের দলকে সাফল্য এনে দিতে পারে কি না, সেটাই দেখার। তবে বাংলা শিবিরে শেষ চারের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গিয়েছে।