Graham Reid

Graham Reid: কোচ রিডের মন্ত্র: বোর্ডে শান্ত থাকার বার্তা, মাঠে সাহসী হকি

নিয়মিত ম্যাচের আগে দলীয় বৈঠকে একটা ড্রয়িং বোর্ড ঝুলিয়ে রাখেন কোচ রিড।

Advertisement

কৌশিক দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২১ ০৮:৪৬
Share:

কান্ডারি: ৪১ বছর পরে কোচ রিডের হাত ধরে এল পদক। ফাইল চিত্র

দুটো মন্ত্র তিনি দিয়েছিলেন ছেলেদের। এক, হারার ভয় নিয়ে খেলতে নামবে না। দুই, সবার আগে দলের স্বার্থ। দলকে সবার আগে রাখতে হবে।

Advertisement

বছর দুই হল ভারতীয় হকি দলটাকে হাতে পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন খেলোয়াড় গ্রাহাম রিড। আর নেপথ্যে থেকে বদলে দিয়েছেন গোটা দলের মানসিকতা। যাঁরা মাঠে নেমে ভয়ডরহীন হকি খেলেন। আবার সব সময় একটা শান্ত ভাব ধরে রাখেন।

নিয়মিত ম্যাচের আগে দলীয় বৈঠকে একটা ড্রয়িং বোর্ড ঝুলিয়ে রাখেন কোচ রিড। তাতে লেখা থাকে— ‘বি কাম’। অর্থাৎ, শান্ত থাকো। কেন এই বার্তাটা দেন তিনি দলকে? প্রশ্ন শুনে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ভারতীয় কোচ জবাব দেন, ‘‘এই দলে যারা খেলছে, তাদের দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড়। তাই আমি চেষ্টা করি মানসিক ভাবে ওদের শান্ত রাখতে। যাতে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে মাঠে নেমে।’’ বোর্ডে যে ‘বি কাম’ কথাটা লেখা থাকে, তা ভিডিয়ো কলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রথম জানান দলের সহ-অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিংহ। তাঁর কথাতেই পরিষ্কার ছিল, কোচের কৌশল কতটা মনে ধরেছে খেলোয়াড়দের।

Advertisement

রিডের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে শুধু হকিই নেই। খনিজ দফতর থেকে শুরু করে তিনি বিমা কোম্পানির উচ্চ পদেও কাজ করেছেন। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি হকি খেলোয়াড় রিক চার্লসওয়ার্থের অনুরোধে কোচিংয়ে আসেন। শোনা যায়, ২০১৯ সালে তিনি ভারতের দায়িত্ব নেন চার্লসওয়ার্থের কথা মতোই।

নিজের সম্পর্কে একটা কথা ফাঁস করেছেন রিড। বলছিলেন, ‘‘জার্মানি ম্যাচে শেষের দিকে একটা সময় আমার পক্ষেও শান্ত থাকা কঠিন হয়ে পড়েছিল। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে আমার পেসমেকারটা আবার চলতে শুরু করে!’’ কোনও সন্দেহ নেই, পার্‌থে থাকা তাঁর পরিবার ওই উত্তেজনার মুহূর্তে কিছুটা
উদ্বেগেই ছিল।

আরও একটা ব্যাপার প্রতিটা ম্যাচের সময়ই করে থাকেন কোচ। প্রথম দুই অর্ধ শেষ হওয়ার পরে দেখা যায় দলের খেলোয়াড়দের ডেকে নিয়ে আলাদা করে কিছু একটা বলছেন তিনি। প্রতি ম্যাচের মাঝপথে ওই বিশেষ বার্তাটা কী থাকে? রিড অবশ্য ভেঙে বলতে চাননি। একটু হেসে মনপ্রীত সিংহদের কোচের মন্তব্য, ‘‘আমি যা বলে থাকি, সেটা ওরা মাঠে নেমে ভুলেই যায়। দিনের শেষে জিজ্ঞেস করলে মনে করতে পারে না!’’

দলের দায়িত্ব নিয়ে রিড প্রধানত জোর দিয়েছিলেন রক্ষণকে মজবুত করার দিকে। ছেলেদের বলেছিলেন, ‘‘ফলের কথা ভাববে না। ম্যাচ শেষ দিকে এলেও চাপ নেবে না। খোলা মনে খেলে যাবে।’’ টোকিয়োয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাত গোল খাওয়াটা বাদ দিলে সাত ম্যাচে ১৬ গোল করেছে বিপক্ষ। ভারতীয় দল গোল করেছে ২৫টি। আর আট ম্যাচে হার শুধু অস্ট্রেলিয়া এবং বেলজিয়ামের কাছে।

অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী ভারতের প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় অশোক কুমার মনে করেন, আগের থেকে ভারতের রক্ষণ অনেক মজবুত হয়েছে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আগে শেষ দিকে চাপটা সামলাতে পারত না ভারত। এখন কিন্তু পারছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন