শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করছে প্যালেস্তাইন
ইজরায়েলি হামলায় দলের বেশ কিছু সদস্য মারা গিয়েছেন। দলের প্রধান কোচের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক খেলোয়াড় গ্রেফতার হয়েছেন। ফলে প্রধান প্রথম একাদশের অধিকাংশই দলের সঙ্গে ভারতে আসতে পারেননি। তা সত্বেও ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাইছেন প্যালেস্তাইন দলের কোচ সায়েব জোন্ডিয়া থেকে দলের সর্বাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় হ্যাথাম দিপ। তাঁদের দাবি, ‘‘এত কিছুর পরেও খেলায় তার কোনও প্রভাব পড়বে না।”
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে প্যালেস্তাইন ও ভারত দু’দলই। ভারতীয় দল অবশ্য এর আগের সাক্ষাতের হারের বদলা নিতে ভরসা রাখছে ঘরের মাঠে জন সর্মথন ও কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে এর আগে খেলার অভিজ্ঞতার উপরেই। আজ সোমবার সন্ধ্যে সাড়ে ৬ টায় ফ্লাড লাইটে খেলা হবে বলে এদিন সন্ধ্যাতেই অনুশীলন করেন প্যালেস্তানীয় দলটি। ভারতীয় দল বিকেলেই অনুশীলন সারে।
দোভাষী নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আসেন প্যালেস্তানীয় কোচ ও গোলরক্ষক। ইজরায়েলি হানার প্রসঙ্গে তাঁদের চোখেমুখে ধরা পড়েছে আতঙ্ক। কীভাবে দেশের মানুষ চোখের সামনে মারা গিয়েছে তার বর্ণনা করতে গিয়ে শিউরে উঠেছেন তাঁরা। তবে ফুটবল মাঠে তাঁরা একশো শতাংশ নিংড়ে দিতে রাজি। কোচ জোন্ডিয়া বলেন, “আমাদের দলে অনেক সমস্যা রয়েছে। তা সত্বেও ফুটবলের মাঠে একটা জয় আমাদের দেশের মানুষকে মৃত্যুর দুঃখ ভুলিয়ে দিতে পারে। আমাদের দলের যা শক্তি তাতে আমরা জয়ের ব্যপারে আশাবাদী। তিনজন পেশাদার ফুটবলার রয়েছে।” জয়কে পাখির চোখ করেছেন খেলোয়াড়রাও। গোলরক্ষক দিপ জানান, “ভারতীয় দলকে আমরা দু’বছর আগে কোচিতে হারিয়েছি। এবারও ভাল খেলার ব্যপারে আশাবাদী। তবে এখানকার গরম ও আর্দ্রতা সমস্যা তৈরি করতে পারে।” এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ের উপরে ফিফা র্যাঙ্কিং নির্ভর করবে। তবে র্যাঙ্কিং নিয়ে নয়, প্যালেস্তাইন দলের এখন একটাই লক্ষ্য, ম্যাচ জিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মানুষকে জয় উত্সর্গ করা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করছে ভারতের ফুটবল দল। নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় দলের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী ও কোচ উইম কোয়েভারম্যান্স। সুনীল আগাগোড়া আশাবাদী। তিনি বলেন, “এই মাঠে দলের আগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাছাড়া শিলিগুড়ির সমর্থকরা দেশের হয়ে গলা ফাটাবেন বলে আমি নিশ্চিত।” এছাড়া দলের পক্ষে অন্য কোনও আশার বাণী শোনাতে পারেননি তিনি।” চলতি বছরে ভারতীয় দল অবশ্য বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ম্যাচেই হেরেছে। কোচ অবশ্য মনে করছেন দলের চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই। কিন্তু পরিকাঠামো ও কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবেই ভারতীয় দল এগোতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বিভিন্ন এশীয় দেশগুলি যে পদ্ধতিতে খেলোয়াড়দের পরিচর্যা করে, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) তা করে না। কর্মকর্তাদের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তাঁরা গা করেন না।” এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই খেলোয়াড়রা পুরোদস্তুর চেষ্টা করছেন বলে কোয়েভারম্যান্স মনে করছেন। বর্তমানে ভারতীয় দলের বিশ্ব র্যাঙ্কিং (১৫৮) এর তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে প্যালেস্তাইন দলের র্যাঙ্কিং (১০২)। এই ম্যাচে জয় পরাজয়ের উপরে র্যাঙ্কিং ওঠানামা নির্ভর করবে বলে এআইএফএফ সূত্রে জানানো হয়েছে।