সাধারণ ভাবে ‘সেফ এগ্জ়িট’ হল কোনও জায়গা থেকে নিরাপদে প্রস্থান বা চলে যাওয়া। তবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘সেফ এগ্জ়িট’ বলতে বোঝায় কোনও অভিযুক্তকে জবাবদিহির বাইরে রেখে নিরাপদে প্রস্থান করার সুযোগ করে দেওয়া। যেমনটা করে দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনাকে।
বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত এমন ‘সেফ এগ্জ়িট’-এর ঘটনা ঘটেছে তিনবার। ‘এগ্জ়িট’ শব্দটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রথম আসে ২০০৭ সালে। সে বার ক্ষমতায় এসে দেশের একাধিক সংস্কারের কথা বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। গ্রেফতার করা হয় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত একাধিক নেতামন্ত্রীকে। কারাবাস হয় শেখ হাসিনারও। তবে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে নিরাপত্তার কথা ভেবে ‘সেফ এগ্জ়িট’ করেন সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয় সেনাবাহিনী-সহ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নেতৃত্বের। এরপরই ২০০৮ সালে নির্বাচিত নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেশত্যাগ করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ফখরুদ্দীন আহমেদ এবং সেনাপ্রধান মঈন উ আহমেদ।
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবর রহমান-সহ তাঁর পরিবারের আঠারো সদস্যের খুনের ঘটনার পর অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের ‘সেফ এগ্জ়িট’ দেওয়া হয়। বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করে সুনিশ্চিত করা হয় নিরাপত্তা। অভিযুক্তদের কয়েকজনকে আবার বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক পদে নিয়োগ করে বিদেশেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে শেখ হাসিনা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করে তার বিচার করেন।
জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর ‘সেফ এগ্জ়িট’ দেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে। ২০২৪ সালের পাঁচ অগস্ট ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে সেনার বিশেষ বিমানে ভারতে আশ্রয় নেন মুজিবকন্যা। দিল্লিতে বোন রেহানার সঙ্গেই হাসিনা রয়েছেন বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি।