মধুময় ঘোষ। ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক
চোখ ফেরাতে পারছিলেন না দর্শকেরা। স্কোর বোর্ড বেড়ে চলেছিল তরতরিয়ে। শেষমেশ, ৬১ বলে ২০৩ রান বলে ইনিংস শেষ করলেন বনগাঁর যুবক মধুময় ঘোষ ওরফে বিকু।
বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহকুমা ক্রিকেট লিগের ম্যাচ ছিল বনগাঁ থানা ও ঢাকাপাড়ার নিউশক্তিমান ক্লাবের মধ্যে। বনগাঁ থানা দলের খেলোয়াড় বিকুর ব্যাটিংয়ে বিস্মিত সকলেই।
বিকুকে নিয়ে ক্রীড়ামহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। দর্শকেরা ফের তাঁর খেলা দেখতে চান। অনেকেই খোঁজ নিচ্ছেন, বনগাঁ থানা দলের পরবর্তী ম্যাচ কবে।
জয়ন্তীপুরের একটি মাঠে ওই দিন খেলাটি ছিল। তিরিশ ওভারের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বনগাঁ থানা। তারা ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভারে ৭৫ রান করেছিল। এরপরেই ব্যাট করতে নামেন বছর আঠাশের যুবক বিকু। শুরু থেকেই মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন বীরেন্দ্র সহবাগের ভক্ত বিকু। মাত্র ২৬ বলে সেঞ্চুরি করেন। শেষ করলেন ৬১ বলে ২০৩ রান করে। দলের রান পৌঁছে দেন ৩২০তে। বিকু ১৯৮ রান শুধু চার-ছয় মেরে করেছেন। ইনিংস সাজানো ছিল ২৫টি ছক্কা ও ১২টি চার দিয়ে। শুধু ব্যাট হাতেই নয়, স্পিন বোলার হিসাবেও বিকু সফল। ওই ম্যাচে ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে তিনি ৩টি উইকেট পেয়েছেন।
বনগাঁর কালুপুরের বাসিন্দা বিকু সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু ধ্যানজ্ঞান হল ক্রিকেট। বনগাঁ মহকুমা ক্রিকেট লিগে এমন মারকাটারি ইনিংস শেষ কবে দেখা গিয়েছে, তা কেউ মনে করতে পারছেন না। এর আগেও বিকু সেঞ্চুরি করেছেন। তবে এমন দাপট দেখা যায়নি। ছোটবেলা থেকেই বীরেন্দ্র সহবাগের খেলা দেখতে অভ্যস্ত বিকু। আর গুরুকে নকল করে ব্যাট চালান।
পরবর্তী লক্ষ্য কী?
লাজুক স্বভাবের বিকু বলেন, ‘‘আমার স্বপ্ন, বাংলা দলের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলা। কিন্তু সেই সুযোগ কি আর পাব?’’
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি সুব্রত বক্সিও বিকুকে নিয়ে গর্বিত। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও পর্যায়ের ক্রিকেটেই এমন ব্যাটিং করা যথেষ্ট কৃতিত্বের। চেষ্টা করব ওকে কলকাতার বড় দলে ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে দিতে।’’
খুশি পুলিশ কর্তারাও। বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ থানার মাঠেই বিকুদের অনুশীলনের জন্য পিচ তৈরির ব্যবস্থা করেছেন। বললেন, ‘‘বিকুর সাফল্যে আমরা গর্বিত। ও যাতে ভাল করে খেলায় মন দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’