বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল বসিরহাটের নানা প্রান্তে

বিষয়টি নিয়ে বিজেপির জেলা নেতারা যথেষ্ট বিব্রত। বিজেপির বসিরহাট জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘এটা গোষ্ঠী কোন্দল নয়। মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা।

Advertisement

নিজস্ব স‌ংবাদদাতা

নির্মল বসু  শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল বসিরহাটের নানা প্রান্তে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে বসিরহাট মহকুমায় দলীয় কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা, গালিগালাজ, মারধরের ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক দিনে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে বিজেপির জেলা নেতারা যথেষ্ট বিব্রত। বিজেপির বসিরহাট জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘এটা গোষ্ঠী কোন্দল নয়। মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা। মানুষ এগিয়ে এসে কাজ করে মণ্ডল সভাপতি হতে চাইছেন।’’ তাঁর মতে, সামনে পুরভোট। তারপরে বিধানসভা ভোট। অনেকেই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি হতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন।’’ তবে নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

বিজেপি সূত্রের খবর, তাদের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার অধীন ৩০টি মণ্ডল আছে। ইতিমধ্যে ওই সব মণ্ডলগুলির সভাপতি নির্বাচন শুরু হয়েছে। তাতেই বিজেপির ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার নিয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হওয়ার পর থেকে গণেশ ঘোষকে দলের একটা গোষ্ঠী মেনে নিতে পারছে না। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জমি হারানোর ভয়ে মণ্ডল সভাপতি পদে নিজেদের পছন্দের লোককে দেখতে চাইছে। পাল্টা বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে প্রার্থী দেওয়ায় গন্ডগোল বাধছে।

Advertisement

দিন কয়েক আগে হিঙ্গলগঞ্জ গ্রামীন মণ্ডলের সভাপতি নির্বাচনে রিগিং হয়েছে বলে এক পক্ষের অভিযোগ। তা নিয়ে দলের হয়ে রিটার্নিং অফিসার হয়ে আসা ব্যক্তির সঙ্গে বচসা বাধে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বয়স ভাঁড়িয়ে এক জনকে সভাপতি করা হবে বলে আগে থেকে ঠিক ছিল বলে এক পক্ষের অভিযোগ। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কাছের লোক হওয়ায় এক জনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে এখানে।

হিঙ্গলগঞ্জে বিজেপির এক কর্মীর বাড়িতে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন ঘিরে ঢালাও খরচ নিয়েও বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। একই ভাবে সন্দেশখালিতে বিপ্লব মণ্ডল ও শিবু পান্ডার অনুগামীদের মধ্যে গন্ডগোল, হাতাহাতি বাধে। শুক্রবার বসিরহাটে সংগ্রামপুরেও একই বিষয় নিয়ে গন্ডগোল হয়। বাদুড়িয়ার চাতরায় মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন ঘিরে রঞ্জিত মণ্ডল ও বিরোধী গোষ্ঠীর অর্জুন দে-সুপ্রীতি সরকারের মধ্যে গন্ডগোল বাধে বলে অভিযোগ।

মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েক দিনে বসিরহাটেও বিজেপির কোন্দল সামনে আসছে। বসিরহাট টাউনহল এলাকায় সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে গোলমাল বাধে।

বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি শুরুর মুখেই উভয় পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়ে যায়। জেলা সভাপতির অনুগামীরা দলীয় সংগঠনের ভোটার তালিকা ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ। দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে মারামারি-ভাঙচুর হয় বলে বিজেপির একটি সূত্রের দাবি। শেষে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন স্থগিত করে দেন দলের নেতা রাকেশ মৃধা। জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ অফিস ছেড়ে চলে যান।

এ বিষয়ে গণেশ বলেন, ‘‘ভোটে কোনও ঝামেলা হয়নি। বুথ কমিটি গঠন সম্পূর্ণ না হলে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছে দলের সংবিধান মেনেই।’’ তাঁর দাবি, এটা সে অর্থে নির্বাচন বলা ঠিক হবে না। মণ্ডল সভাপতি মনোনয়ন করা হবে।

এক গোষ্ঠীর আবার দাবি, জেলা সভাপতির অনুগামীদের পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করতে পরিকল্পিত ভাবে ঝামেলা পাকানো হয়েছে। তা অবশ্য ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী মানতে রাজি নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন