এখনও বন্ধ রয়েছে নামখানার ১০ মাইল দক্ষিণ দুর্গাপুর চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠ স্কুলের পঠন-পাঠন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্য শিক্ষকদের মারপিটের ঘটনা ঘটেছিল গত বৃহস্পতিবার। তার পর থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে নামখানার ১০ মাইল দক্ষিণ দুর্গাপুর চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠ স্কুলের পঠন-পাঠন।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২০০। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহ মোট ১৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ৩ জন। স্কুলে শিক্ষকের অভাবে পঠন-পাঠনের সমস্যার পাশাপাশি পরিকাঠামো, আর্থিক দুর্নীতি-সহ নানা সমস্যা নিয়ে মাস কয়েক আগে থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশের বিরোধ শুরু হয়।
স্কুল সূত্রের খবর, সমাধানের জন্য একাধিকবার স্কুলে অভিভাবকদের সঙ্গে দু’পক্ষের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে একদল অভিভাবক ও কয়েকজন ছাত্র শিক্ষকদের ঘরে চড়াও হয়। ঘরের মধ্যে আটকে রেখে কয়েকজন শিক্ষককে মারধর করে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাতে জখম হয়েছেন জনা তিনেক শিক্ষক। জখমদের মধ্যে একজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দিকে ওই ঘটনার পর অনেক শিক্ষক স্কুলে না আসায় স্কুলের পঠন-পাঠন কার্যত বন্ধ রয়েছে। নামখানা চক্রের স্কুল পরিদর্শক মৃণাল দাস বলেন, ‘‘ওই স্কুলের পুরনো সমস্যা রয়েছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার বিষয়ে ওরা আমার কাছে লিখিত কিছু জানায়নি। তবে শিক্ষাবন্ধুর কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি। সমস্ত বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
স্কুলের শিক্ষক অলোক দাস, বিপ্লব পাত্ররা বলেন, ‘‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্কুলে নানা আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত রয়েছেন। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে ছাত্র ও অভিভাবকদের খেপিয়ে তুলেছে। তারাই আমাদের মারধর করে।’’ তাঁদের অভিযোগ, স্কুলের পরিকাঠামোর সমস্যা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল বলেই তাঁদের উপরে হামলা চালানো হল। এতে স্থানীয় নেতাও কিছু যুক্ত আছে বলে তাঁরা জানান।
অলোক জানান, নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন তাঁরা। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ভয়ে পুলিশের কাছে প্রথমে অভিযোগ জানাতে পারেননি তাঁরা। শনিবার রাত ১০টা পুলিশে অভিযোগ করা হয়।
এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার শিক্ষক দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে মারধর করেন। খবর পেয়ে ওই ছাত্রের অভিভাবক দলবল নিয়ে স্কুলে চলে আসেন। তাঁরা এসে দেখে আমার ঘরেও তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন শিক্ষকেরা। তারপরেই গন্ডগোল হয়।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওই শিক্ষকেরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলে তিনি জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।