24 Parganas News

জবরদখল নদী-পাড়, বন্যার শঙ্কা আমতায়

বন্যার আশঙ্কা নিয়ে মুখ খোলেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশও। তার পরেও অবশ্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আমতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ১৪:১৪
Share:

বাঁধের উপরই গড়া উঠেছে অবৈধ নির্মাণ। নজর নেই প্রশাসনের। —নিজস্ব চিত্র

গত কয়েক বছরে জবরদখল হয়ে গিয়েছে দামোদরের পাড়ের অনেকটা অংশ। ফলে, নদীর এলাকা সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় বন্যার আশঙ্কা বাড়ছে আমতা শহরে।

Advertisement

গত বছরেই নদী উপচে ডুবেছিল এ শহরের একাংশ। তার আগে সেচ দফতরের কাছে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে ছিলেন উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আমতায় এসেছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সেই বৈঠকেও ফের ওঠে জবরদখলকারীদের কথা। বন্যার আশঙ্কা নিয়ে মুখ খোলেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশও। তার পরেও অবশ্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

সেচ দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক কর্তা জানান, জবরদখলকারীদের জন্য যে সমস্যা হচ্ছে, সে কথা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো সত্ত্বেও উচ্ছেদ নিয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি। বিপদ থাকলেও তাঁদের হাত-পা বাঁধা। সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই জবরদখলকারীদের নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কিন্তু উচ্ছেদের আগে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে, এটাই সরকারের নীতি। তাই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না-করে কাউকে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়।’’

Advertisement

আমতা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর। কলেজ মোড় থেকে সেচ দফতরের বাংলো পর্যন্ত দামোদরের চরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের বেশিরভাগটাই জবরদখল হয়ে গিয়েছে। অনেক পাকা বাড়ি ও দোকানঘর তৈরি হয়েছে। ফলে, এই এলাকায় নদী সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে।

এমনিতে দামোদরের জলে আমতা শহরে বন্যার আশঙ্কা থাকার কথা নয়। কারণ, শহরটি পড়ে আমতা-১ ব্লকে, দামোদরের পূর্ব পাড়ে। পশ্চিম দিকে পড়ে আমতা-২ এবং উদয়নারায়ণপুর ব্লক। এই দুই ব্লককে ‘স্পিল’ এলাকা ঘোষণা করেছে সেচ দফতর। অর্থাৎ, ডিভিসি-র ছাড়া জল এই দুই ব্লক দিয়ে বেরিয়ে যায়। সেই কারণে ওই দু’টি ব্লকে দামোদরে কোনও বাঁধও নেই। ফলে, ডিভিসি-র ছাড়া জলে যখন ওই দুই ব্লকে বন্যা হয়, তখন আমতা শহর অনেকটা নিরাপদ থাকে।

আমতা-১ ব্লকে দামোদরে শক্তপোক্ত বাঁধ আছে। থাকে। সেই বাঁধ নিয়মিত মেরামতও করা হয়। তা সত্ত্বেও গত বছর বর্ষার মরসুমে পূর্ব দিকের বাঁধেই বেশ কয়েক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল। সেই ভাঙন দিয়ে জল ঢুকেছিল।
নদী সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ায় এ বারও বাঁধে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে শহরবাসীর অনেকের। এ জন্য তাঁরা জবরদখলকেই দায়ী করেছেন। নিরাপত্তাহীনতাতেও ভুগছেন তাঁরা।

গত বছর আমতা সেচবাংলোয় তৎকালীন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে বিধায়ক নির্মলবাবু জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। তাঁর অভিযোগ ছিল, কলেজ মোড় থেকে সেচ দফতরের বাংলো পর্যন্ত অন্তত দেড়শো জবরদখলকারী আছেন। রাজীব তখন জানিয়েছিলেন, ঠিক কতজন জবরদখলকারী আছেন তা সমীক্ষা করে দেখা হবে। তারপরে জবরদখলকারীদের নিয়ে কী করা হবে সে বিষয়ে নীতি ঠিক করা হবে।

কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনও সমীক্ষা হয়নি। সরানো হয়নি জবরদখলকারীদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন