বিজলি সরকার
ঠান্ডা পড়তে শুরু করলেও মশার আক্রমণ আর জ্বরের প্রকোপ কমেনি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। মশা মারতে ধোঁয়া দেওয়াও অব্যাহত। তবু শুক্রবার সকালে শ্যামনগর শরৎ পল্লির এক বাসিন্দার মৃত্যুর ঘটনায় ফের ডেঙ্গির প্রকোপের অভিযোগ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে মৃত্যু হয় বিজলি সরকার (৪০) নামে ওই মহিলার। কিছু দিন ধরেই তিনি জ্বরে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে সুজন। দিন কয়েক আগে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন। রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই কম ছিল। রক্ত পরীক্ষায় জানা যায়, তাঁর এনএস-১ পজিটিভ। তার পরে বাড়ি ফিরে এলেও বৃহস্পতিবার জ্বর বাড়ায় ফের বিজলীদেবীকে ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
সুজন বলেন, ‘‘স্থানীয় চিকিৎসকও বলেছিলেন মায়ের ডেঙ্গি হয়েছে। আমাদের পাড়াতেও অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি করার পরে এক রাতের মধ্যেই অবস্থার দ্রুত অবনতি হল। মাকে বাঁচানো গেল না।’’ শুক্রবার হাসপাতাল থেকে দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে অবশ্য বিজলিদেবীর মৃত্যুর কারণ ‘হেপাটিক ফেলিওর’ লেখা হয়েছে।
সুজন বলেন, ‘‘আমরা গরিব, মায়ের চিকিৎসার টাকাই ঠিক মতো জোগাড় করতে পারিনি। মৃত্যুর পর সৎকারের টাকাটুকুও নেই।’’ পাড়ার লোকেরাই চাঁদা তুলে সৎকারের খরচ জুগিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিপুল ঘোষাল বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে খাওয়া জুটত পরিবারটির। মহিলার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সামান্য আয়ের টাকাও শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করছি।’’ বিপুলবাবুরও দাবি, এলাকায় অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে বেশিরভাগের। এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, পুরসভা নিকাশি নালাগুলির পাশে ও আবর্জনার স্তূপে ব্লিচিং ছড়িয়েছে। ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘এনএস-১ পজিটিভ মানেই যে ডেঙ্গি নয়, তা অনেকে বুঝতে পারছেন না। বিভ্রান্তি বাড়ছে। তবে পুরসভা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’