এনআরসির কারণে অসমের শ্বশুড়বাড়ি ছেড়ে কোচবিহারে বাপের বাড়িতে ফিরলেন এক মহিলা। প্রতীকি ছবি।
এনআরসির কারণে অসমে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন আরতি ঘোষ। তাই অসমে ভরা সংসার ছেড়ে সেই মহিলাকে কোচবিহারে নিজের বাপের বাড়িতে ফিরে আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। রবিবার নিজের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টে ওই মহিলার নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দিয়ে তৃণমূল সাংসদ দাবি করেছেন, ‘‘আরতি কোচবিহারের বক্সিরহাটের ঝাউকুটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এমন এক পরিবারের যারা বহু প্রজন্ম ধরে সেখানে বসবাস করছে। ঘোষ পরিবারের একমাত্র দোষ ছিল তাদের মেয়েকে অসমের একটি পরিবারে বিয়ে দেওয়া। বাংলা-বিরোধী অসম সরকার আরতিকে বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে এনআরসি তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দেয়। এর ফলে তাঁকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আবার কোচবিহারে ফিরে আসতে হয়। এনআরসিতে নাম তোলার আবেদন বাতিল হওয়ার ফলে অসমে হয়রানির শিকার হওয়া বহু উদাহরণের মধ্যে একজন আরতি ঘোষ।’
নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মহিলাকে এনআরসির তালিকায় বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব ছবি।
প্রসঙ্গত, কোচবিহার জেলার বক্সিরহাট এলাকা তুফানগঞ্জ বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত। সেখানে বর্তমানে রয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। যদিও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কোচবিহারে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের জগদীশ বাসুনিয়া। সামিরুল বলেছেন, ‘‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর এ বার বাংলার মেয়ের নাম এনআরসিতে বাদ দিয়ে তাঁর নাগরিকত্ব হরণ করে তাঁকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’’ সাংসদ জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি দলের নজরে আনবেন।
তবে তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার করছে তৃণমূল। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ওরা মানুষকে খেপিয়ে তুলতে চাইছে। ওই মহিলা আমাদের কোচবিহারের মেয়ে, যাঁর বিয়ে হয়েছিল অসমে। তাই বাপের বাড়ি থেকে নিজের নাগরিকত্বের যাবতীয় বৈধ কাগজ অসমে নিয়ে গিয়ে আবেদন করলেই সমস্যার সমাধান হবে। সমস্যা সমাধানের পথ না দেখিয়ে তৃণমূল উল্টে তাদের বিভ্রান্ত করে তাদের আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’