Joka-Majerhat Metro

জোকা-মাঝেরহাট মেট্রো চালু হলে কতটা সুরাহা মিলবে? ধন্দে বেহালাবাসী

নতুন এই পরিষেবা চালু হলেও, তা বেহালাবাসীর জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ, দীর্ঘ দশ বছরে মেট্রোর নির্মাণকার্যের কারণে বেহালাবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২১
Share:

সোমবার থেকে সাধারণের জন্য খুলে যাচ্ছে জোকা-তারাতলা মেট্রো রেল। ছবি: সংগৃহীত।

রাত পোহালেই বেহালাবাসীর বহু প্রতীক্ষিত জোকা-মাঝেরহাট মেট্রো প্রকল্পের পথচলা শুরু হবে। যদিও, এই প্রকল্প পূর্ণতা পাবে বিবাদী বাগের সঙ্গে যুক্ত হলে। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল যে দিন এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন, সে দিনই তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, এই মেট্রো চলবে জোকা-বিবাদী বাগের মধ্যে। কিন্তু প্রায় সাড়ে দশ বছর নির্মাণকাজে মাত্র অর্ধেক পথ শেষ করা সম্ভব হয়। তাই আপাতত জোকা-মাঝেরহাটের মধ্যেই চলাচল করবে এই মেট্রো রেল। বাকি নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেলে মাঝেরহাটের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হবে বিবাদী বাগকে।

Advertisement

কিন্তু নতুন এই পরিষেবা চালু হলেও, তা বেহালাবাসীর জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ, দীর্ঘ দশ বছরে মেট্রোর নির্মাণকার্যের কারণে বেহালাবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তাও জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ করা সম্ভব হয়নি। আর যেটুকু পথে মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে, তাতে তাঁদের বিশেষ সুবিধাও হবে না। কারণ, জোকা থেকে মাঝেরহাট বা অন্য কোনও স্টেশনে পৌঁছনোর জন্য বিকল্প পরিবহণের বন্দোবস্ত রয়েছে। বাস, অটো কিংবা ট্যাক্সিতে চড়েও সেই পথ অতিক্রম করা যাবে সহজেই। আর মাত্র একটি রেক নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে কতটা পরিষেবা দেওয়া যাবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সোমবার থেকে সাধারণের জন্য খুলে যাচ্ছে জোকা-তারাতলা মেট্রো রেল। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লি থেকে এই মেট্রো প্রকল্পের সূচনা করেছেন। তার পরেই এই মেট্রো পরিষেবা পরিদর্শন করে গিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। জোকা স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ১০টায়। সেই ট্রেন তারাতলায় পৌঁছবে ১০টা বেজে ১৫ মিনিটে। তার ১৫ মিনিট পর অর্থাৎ সাড়ে ১০টায় সেই ট্রেন তারাতলা থেকে ছাড়বে। এই মুহূর্তে মাত্র একটি রেক নিয়েই মেট্রো শুরু করছে পরিষেবা। সেই রেকটি দিনে বারো বার যাতায়াত করবে। এই মুহূর্তে সপ্তাহে ৫ দিন চলবে মেট্রো। শনি ও রবিবার বন্ধ থাকবে মেট্রো পরিষেবা। এই রুটে কেমন যাত্রী হচ্ছে, সেই বিষয়গুলো দেখে তবেই মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে। জোকা থেকে শেষ ট্রেন ছাড়বে বিকেল ৫টায় এবং তারাতলা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টায়। তাই বেহালার মতো জনবহুল জনপদে এই সংক্ষিপ্ত সময়ে মেট্রো চালিয়ে রেল মন্ত্রক বা স্থানীয় বাসিন্দাদের কতটা লাভ হবে? সেই প্রশ্ন নিয়েই শুরু হচ্ছে এই মেট্রো পরিষেবা।

Advertisement

এই মেট্রো প্রকল্প শুরু নিয়ে তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও। বেহালার বাসিন্দা তথা কলকাতা পুরসভার বোরো-১৬-র চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী রেলমন্ত্রী থাকাকালীন নিজের দূরদৃষ্টি নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু যদি এই মেট্রোকে এসপ্ল্যানেড নিয়ে যাওয়া না হয়, তা হলে এর সুফল বেহালার মানুষ কোনও দিনও পাবেন না। কারণ, একটি নির্দিষ্ট সময়েই এই মেট্রো প্রকল্পটি চালানো হচ্ছে। যা কেবল একটু-আধটু বেড়ানোর কাজে লাগানো যেতে পারে, কাজের কাজে লাগবে না।’’ তবে বেহালার বিজেপি নেত্রী রাখী চট্টোপাধ্যায় আবার এই প্রকল্পকে নেতিবাচক হিসেবে দেখতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘দশ বছর ভোগান্তির পর যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বেহালার মানুষ মেট্রো প্রকল্পের সুবিধা পাবেন, বিষয়টিকে এ ভাবেই দেখতে চাই। কারণ, ২০১০ সালে প্রকল্প যে-ই শুরু করিয়ে থাকুন না কেন, কে বা কারা তা শেষ করেছেন সেটাই বড় কথা। এক সময় তো বেহালাবাসী ধরেই নিয়েছিল এই মেট্রো আদৌ কোনও দিন চালু হবে না। কিন্তু একবার মেট্রো প্রকল্প যখন শুরু হয়েছে, তখন তা বিবাদী বাগ পৌঁছবেই বলেই আমরা বিশ্বাস করি। এবং প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই এই প্রকল্প পূর্ণতা পাবে বলেই আমরা বিশ্বাস রাখি। আর রাজনৈতিক কৃতিত্বের দাবি করে কোনও লাভ নেই। মানুষ সচেতন তাঁরা জানেন কে কী কাজ করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement