TMC Inner Clash in Balagarh

তৃণমূলের ঘরোয়া সংঘাত ঠেকাতে এ বার সক্রিয় হতে হল পুলিশকে! উত্তপ্ত বলাগড়ে র‌্যাফের রুট মার্চ

বুধবার রাতে রুনার ‘লোকজনের’ বিরুদ্ধে জিরাটের আহমেদপুরে বিধায়কের কার্যালয় ভাঙচুর করে তাতে কাদা লেপে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ব্যাপারী-ঘনিষ্ঠ এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও হামলা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বলাগড় শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর দফতর ভাঙচুর এবং তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই নেত্রী রুমা খাতুনের থানায় অভিযোগ দায়ের ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে হুগলির বলাগড়ে। সেই আবহেই এ বার সেই এলাকায় রুট মার্চ করল পুলিশ এবং র‌্যাফ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের ডিএসপি দেবীদয়াল কুণ্ডু, সিআই (মগরা) শ্যামল চক্রবর্তী এবং বলাগড় থানার ওসি রাজকিরণ মুখোপাধ্যায় ছিলেন ওই রুট মার্চে। পুলিশ এবং র‍্যাফের বাহিনী জিরাট হাসিমপুর, হসপিটাল রোড,আহমেদপুর হয়ে বিরাট বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রুট মার্চ করেছে।

রুমার অভিযোগ, ব্যাপারী তাঁর নামে আপত্তিকর শব্দবন্ধ ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পরে বিধায়ক সেই পোস্ট মুছে দিলেও তার স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বলাগড় থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার আগে বুধবার রাতে রুনার ‘লোকজনের’ বিরুদ্ধে জিরাটের আহমেদপুরে বিধায়কের কার্যালয় ভাঙচুর করে তাতে কাদা লেপে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অনতিদূরে ব্যাপারী-ঘনিষ্ঠ এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও হামলা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় মনোরঞ্জন-ঘনিষ্ঠের বাড়ির লোকজনকে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন মনোরঞ্জন। সেখানে তিনি রুনাকে ‘ফুলন দেবী’ বলে অভিহিত করে তীব্র আক্রমণ শানান। নাম না করে এক জনের বিরুদ্ধে ‘বিহিত’ চেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবেন বলেও সেই ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন বিধায়ক। এর পর আসরে নামেন শাসকদলের যুবনেত্রীও। তিনি বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘গো অ্যাহেড। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে যান। যদি টাকাপয়সা লাগে আমি সাহায্য করব। আমি এক জন শিক্ষিকা। আমার রুচিবোধ আছে। আপনি কাদা ছুড়তে পারেন। কিন্তু আমি সন্দেশ দিলাম।’’

এর পর বৃহস্পতির সকালে ভাইরাল হয় বিধায়কের করা অন্য একটি সমাজমাধ্যম পোস্টের স্ক্রিনশট। যদিও সকালে সেই পোস্টটি মুছে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি রুনাদের। এই পোস্টের ভাষা নিয়ে আপত্তি জানিয়েই বৃহস্পতিবার থানায় যান তিনি। সেখানেই লিখিত আকারে নিজের দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। রুনা জানান, তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে গিয়ে বিধায়ক এত নীচে নেমে যাবেন, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। যুবনেত্রীর কথায়, ‘‘আমাকে কিছুই বলতে বাকি রাখেননি। অথচ, আমার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত একটি প্রমাণও দিতে পারেননি। এখন আমি এবং আমার পরিবার অত্যন্ত আতঙ্কিত, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। নিজেই লোক পাঠিয়ে নিজের অফিস ভাঙছেন, তার পর আমার নামে দোষ দিচ্ছেন। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হলাম, মনোরঞ্জন ব্যাপারী এবং তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হলাম।’’

বৃহস্পতিবার সকালে যখন যুব তৃণমূল নেত্রী রুনা বলাগড় থানায় ব্যাপারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছেন, প্রায় একই সময় বিধায়ক সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি ‘‘আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল’ বলে দাবি করে লিখেছেন, ‘সেই পোস্ট লিখবার দশ কুড়ি সেকেন্ডের মধ্যে বুঝতে পারি, একটা মস্ত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। সাথে সাথে সেটা মুছে দিই।’’ পোস্টে আগাগোড়া নিজের করা আগের পোস্টের জন্য ভুল স্বীকার করেছেন ব্যাপারী। আগামিদিনে এমন শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি সতর্ক এবং বিরত থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন