Cyber Fraud Case in Bardhaman

তৃণমূল বিধায়ককে ভিডিয়ো কল করে কামের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা, নেপথ্যে সেই কুখ্যাত ভরতপুর গ্যাং!

সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, যৌনতার ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করাই উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্তদের। আর এ ক্ষেত্রে ‘এগিয়ে’ ভরতপুর গ্যাং।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ২১:৪৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

অপরিচিত নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল। দলের কারও নতুন নম্বর নাকি! ভাবতে ভাবতে ভিডিয়ো কল ধরলেন তৃণমূল বিধায়ক। কিছু ক্ষণের জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন তিনি। কোনও কথা না বলে ভিডিয়ো কল কেটে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বিধায়ক। অভিযোগ, ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে যৌনতার ফাঁদে ফেলার চেষ্টা হচ্ছিল তাঁকে। এই ঘটনায় বর্ধমান জুড়ে শোরগোল। তদন্তে পুলিশ।

Advertisement

বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস জানান, প্রতি দিন প্রচুর ফোন আসে। অনেক নম্বর সেভ করা। তেমনই প্রচুর অচেনা নম্বর থেকে আসা ফোন ধরতেই হয় তাঁকে। কিন্তু ভিডিয়ো কল ‘রিসিভ’ করে যে এমন অপ্রস্তুত হয়ে পড়বেন, ভাবেননি। তিনি জানান, অচেনা নম্বর থেকে আসা একটি ভিডিয়ো কল ধরা মাত্রই মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে ওঠে নগ্ন মহিলার চেহারা। খুব বেশি সময় নষ্ট না করে ‘কল’ কেটে দেন তিনি। খোকনের আশঙ্কা, তাঁকে ফাঁসানোর জন্য ওই কল করা হয়েছিল। বিরোধীদের চক্রান্ত থাকলেও থাকতে পারে। পুরো বিষয়ের বিবরণ দিয়ে বর্ধমান সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

অন্য দিকে, তদন্তে নেমেই বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তারা জানতে পেরেছে, তৃণমূল বিধায়ককে ফাঁদে ফেলতে ওই ভিডিয়ো কল করা হয়েছিল রাজস্থানের ভরতপুর থেকে। সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, যৌনতার ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করাই উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্তদের। আর এ ক্ষেত্রে ‘এগিয়ে’ ভরতপুর গ্যাং।

Advertisement

রাজ্যে এমন বহু সাইবার অপরাধের অভিযোগ মিলেছে, যার সঙ্গে জুড়েছে ভরতপুর গ্যাঙের নাম। এদের ‘অপারেশনের’ কায়দা মোটামুটি এক। টার্গেট পুরুষেরা। গভীর রাতে হঠাৎ ভিডিয়ো কল করা হয়। ফোন ধরলেই যৌনতার হাতছানি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অশ্লীল ভিডিয়ো চালিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময়ে স্ক্রিন রেকর্ড করে দু’পাশের ভিডিও এক ফ্রেমে জুড়ে তৈরি করা হয় আপত্তিকর ভিডিয়ো। তার পর শুরু হয় ব্ল্যাকমেল।

দাবি মতো টাকা না পেলে সমাজমাধ্যমে ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। লজ্জায়, সম্মানহানির ভয়ে অনেকেই টাকা পাঠান। তার পর বাড়তে থাকে আরও অর্থের দাবি। বিধায়কের ক্ষেত্রেও তেমনই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। তবে খোকনের কাছ থেকে প্রতারকেরা স্ক্রিন রেকর্ডিং করার সময় পাননি। বিধায়কের কথায়, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসাবে নানা ফোন ধরতে হয়। কিন্তু এ ভাবে কেউ নোংরামি করতে পারে, ভাবিনি। সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে থানায় জানিয়েছি।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বর্ধমান রেঞ্জের এক ডিআইজির ছবি ব্যবহার করে সমাজমাধ্যমে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে তোলাবাজির অভিযোগে রাজস্থান থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিধায়কের অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “ভিডিয়ো কলটি যিনি বা যাঁরা করেছেন, তাঁদের শীঘ্রই ধরে ফেলব আমরা। গ্রেফতারের প্রস্তুতি চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement