CPM

বাম-কংগ্রেসের অবরোধে স্তব্ধ ২ নম্বর জাতীয় সড়ক

অবরোধ উঠলেও বিক্ষোভকারীরা প্রায় আধঘণ্টা বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়ায় টোল নেওয়া বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। কোনও গাড়ি পার হলেও তাকে বিনা টোলে পার করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:০৩
Share:

কুলটির চৌরঙ্গিতে অবরোধ। তার জেরে দাঁড়িয়ে পড়েছে যানবাহন। নিজস্ব চিত্র।

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পসংস্থাকে বেসরকারিকরণের চেষ্টার প্রতিবাদে, বন্ধ শিল্পের জমিতে নতুন শিল্প স্থাপন, কৃষি আইন প্রত্যাহার-সহ নানা দাবিতে যৌথ ভাবে অবরোধ-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল বাম-কংগ্রেস। জেলায় রবিবারের এই কর্মসূচির জেরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট হয়। প্রায় দেড়ঘণ্টা অবরোধ হওয়ায় বিরক্ত হয়ে পড়েন যাত্রী ও চালকদের একাংশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসাও বেধে যায় যাত্রীদের একাংশের। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে বেলা ১২টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুক্ষণ সময় লাগে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

এ দিনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কার্যকলাপের জাঁতাকলে পিষে মরছে মানুষ। দ্রুত এদের সরাতে হবে। দেশজুড়ে জনমত তৈরি করতেই এই কর্মসূচি।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গরিব মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে হলে সর্বাগ্রে কেন্দ্রের সরকারকে হটাতে হবে। এ জন্য জোট বাঁধা প্রয়োজন। এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’’

এ দিন তিনটি জায়গায় কুলটির চৌরঙ্গি, রানিগঞ্জের পঞ্জাবী মোড় ও কাঁকসার বাঁশকোপায় এই কর্মসূচি হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দু’দলের সদস্য-সমর্থকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১১টা নাগাদ তাঁরা ২ নম্বর জাতীয় সড়কের মাঝে বসে পড়েন। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে যানবাহন। পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানার চৌরঙ্গিতে অবরোধ হওয়ায় ভিন্‌ রাজ্যের ট্রাকগুলি দীর্ঘক্ষণ ডুবুরডিহি চেকপোস্টে আটকে পড়ে। সকাল থেকে মাইথন ও পাঞ্চেতে পিকনিকের উদ্দেশ্যে যাওয়া দলগুলিও মাঝ রাস্তায় আটকে যায়। রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন-সহ ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, মিহিজাম, মুগমা এলাকার বাসগুলিও মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে। অধৈর্য হয়ে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। তাঁরা গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন বিক্ষোভকারীদের কাছে। এ নিয়ে বচসা বেধে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতিস্বাভাবিক করে।

Advertisement

এ দিকে, অবরোধ উঠলেও বিক্ষোভকারীরা প্রায় আধঘণ্টা বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়ায় টোল নেওয়া বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। কোনও গাড়ি পার হলেও তাকে বিনা টোলে পার করানো হয়। টোলপ্লাজ়ার প্রজেক্ট ম্যানেজার রঞ্জন কুমার জানান, কতটা ক্ষতি হয়েছে এখনই বলা সম্ভব নয়। অভিযোগ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষক, বেকারদের সঙ্গে প্রবঞ্চনা করছেন। তাই আধঘণ্টা টোল বন্ধ করেছিলাম।’’

সিটুর জেলা সম্পাদক বংশোগোপাল চৌধুরীর দাবি, ‘‘অতিলাভজনক সিএলডব্লিউকেও কর্পোরেট করে শ্রমিক-কর্মীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই হিন্দুস্তান কেব্‌লস, বার্নস্ট্যান্ডার্ড, এমএএমসি, কুলটি ইস্কো-সহ বিভিন্ন বন্ধ হয়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত করাখানার জমিতে ভারী শিল্প গড়ে তোলা হোক। তবেই বেকাররা কাজ পাবেন। দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।’’ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রশাসক নিয়োগ করে পুর-প্রশাসন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য বিশ্বনাথ যাদব। দুর্ভোগ প্রসঙ্গে দু’দলের নেতৃত্বের দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাঁদের সমর্থন করেছেন।

এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র অশোক রুদ্র ও বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি প্রমোদ পাঠকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাম ও কংগ্রেস দীর্ঘদিন সরকারে থেকেও কিছু করেনি। এখন দিশেহারা হয়েছে অপপ্রচার চালিয়ে পায়ের তলার মাটি খুঁজে পেতে চাইছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন