শেষ দিনে পাহারা আরও কড়া

কাটোয়া ২ ব্লকে দাঁইহাটের দেওয়ানগঞ্জ মোড়েও বিজেপি কার্যালয়ের সামনে বোমাবাজি হয়। সিপিএম, কংগ্রেস নেতারাও মনোনয়ন তুলতে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৮
Share:

পরনে খাকি জামা। হাতে এন্ড্রয়েড ফোন। সোমবার বেলা দশটা বাজতেই কালনা মহকুমাশাসকের কার্যালয় ঘেঁষা চায়ের দোকানে হাজির এক তৃণমূল নেতা। বিকেল ৩টে পর্যন্ত সেখানে বসেই অনর্গল নির্দেশ দিয়ে গেলেন, কোন রাস্তা বন্ধ রাখতে হবে, কোথায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।

Advertisement

কাটোয়া ২ ব্লকে দাঁইহাটের দেওয়ানগঞ্জ মোড়েও বিজেপি কার্যালয়ের সামনে বোমাবাজি হয়। সিপিএম, কংগ্রেস নেতারাও মনোনয়ন তুলতে পারেননি।

এককথায়, আগের ক’দিনে দু’একটা ‘মাছি’ র গললেও শেষ দিন কোনও ফাঁক রাখতে চায়নি তৃণমূল।

Advertisement

এ দিন মন্তেশ্বরের দেনুড়, পুড়শুঁড়ি, কালনার নান্দাই এলাকার কয়েকজন বিজেপি প্রার্থী সকাল সাতটার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন মনোনয়ন কেন্দ্রের কাছাকাছি। কিন্তু চায়ের দোকানে জমা হয়ে থাকা তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। মনোনয়ন না দিয়েই ফিরে যান তাঁরা। বিরোধীদের দাবি, কালনা মহকুমাশাসকের কার্যালয় চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা ছিল ঠিকই, কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর সব রাস্তাই মুখে রুমাল বাঁধা, হাতে লাঠি নিয়ে থাকা তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনি ঘিরে রেখেছিল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, শহরের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা যে রাস্তায় পাহারা দিচ্ছিলেন সেখানে না চেনার একটা সম্ভাবনা ছিল। সেই ফাঁক দিয়ে এক-দু’জন ঢুকিয়ে কিছু মনোনয়ন দেওয়া গিয়েছে।

বেলা দুটো নাগাদ কালনা ১ ব্লক অফিসের সামনে একটি গোলমাল ঠেকাতে লাঠি চালাতে হয় পুলিশকে। বিজেপির অভিযোগ, তাঁদের দু’জন প্রার্থীর মনোনয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি ছিঁড়ে দেয় শাসক দলের লোকজনেরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক বলেন, ‘‘মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা বহু জায়গাতেই প্রার্থী দিয়েছি।’’

সিপিএম, কংগ্রেসেরও দাবি মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই চারিদিকে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তাই অনেকেই মনোনয়ন দিতে যেতে পারেননি। কালনা মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘মনোনয়ন জমা দেওয়াকে ঘিরে এত বাধা আগে কখনও পেতে হয়নি।’’

মনোনয়নে বাধা দেওয়ার কথা অবশ্য মানেনি তৃণমূল। মহকুমাশাসকের কার্যালয় চত্বরে হাজির তৃণমূল নেতা রাজকুমার পান্ডে বলেন, ‘‘বিরোধীদের সংগঠন দুর্বল বলে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’ তাহলে তিনি ওখানে কেন, এত ভিড়ই বা কেন? তাঁর দাবি, ‘‘আমি ২২ নম্বর জেলা পরিষদের দলীয় প্রার্থীর এজেন্ট হওয়ার জন্য নথিপত্র জমা দিতে এসেছি। বাইরে হয়তো উৎসাহী কিছু মানুষ অন্য কোনও কারণে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।’’

পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনাতেও ক্ষুব্ধ তাঁরা। রাজকুমারবাবুর দাবি, ‘‘প্ররোচিত হয়ে কালনা থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মী বেধড়ক মারধর করেছো আমাদের কয়েকজন কর্মী সমর্থককে। উদয়গঞ্জ এলাকার এক কর্মী গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। যাঁরা লাঠি চালানোর ঘটনায় জড়িত তাদের নামে আমরা পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ করতে চলেছি।’’ পুলিশের যদিও দাবি, তৃণমূল বিজেপির গোলমাল থামাতে দু’দলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ দিন সকালে দাঁইহাটের দেওয়ানগঞ্জ মোড়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা ফাটানোর অভিযোগ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, এসডিও অফিসে পৌঁছতেই পারেননি তাঁরা। কাটোয়ায় কংগ্রেস ও সিপিএমের তরফেও কোনও মনোনয়ন পড়েনি এ দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন