প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে শিবিরের আয়োজন হয় কম। ফলে, ঘাটতি দেখা দেয় রক্তের। রাজ্যের নানা প্রান্তেই রক্ত জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয় রোগীর পরিজনদের। কিন্তু সূচি তৈরি করে শিবিরের ব্যবস্থা করে এ বার সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠেছে কালনা হাসপাতাল। শুধু নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত রক্ত মজুতই নয়, ভিন্ জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কেও রক্ত পাঠিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, ভোটের মরসুম ও উৎসবের সময়ে রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়। কারণ, এই সব সময়ে রক্তদান শিবিরে সাড়া মেলে না। অথচ, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রক্তের চাহিদা থাকেই। কালনা মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক যাতে রক্তশূন্য না হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হয়েছে। এখন নিজেদের ভাঁড়ার বাঁচিয়ে খেপে-খেপে নানা জায়গার চাহিদাও মেটানো হচ্ছে। কিছু দিন আগেই এই হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক রামপুরহাটে ১০০ বোতল, সিউড়িতে ৮৭ বোতল এবং কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপে ৫০ বোতল রক্ত পাঠিয়ে সহযোগিতা করেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এই মহকুমায় আর কোনও ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক নেই। প্রতি মাসে রক্তের চাহিদা মেটাতে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ৪০০-৫০০ বোতল রক্ত মজুতের প্রয়োজন হয়। সে জন্য সারা বছর নানা ভাবে প্রচার চালানো হয় এলাকায়। মহকুমা জুড়ে বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, ক্লাব, সেচ্ছাসেবী সংস্থা তাতে এগিয়ে এসেছে। তারা একটি ‘ক্যালেন্ডার’ মেনে বছরভর নির্দিষ্ট দিনে রক্তদান শিবির করে। যেমন কালনা ২ ব্লক তৃণমূলের তরফে ৩১ অক্টোবর বড় শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে অন্তত ১০০ বোতল রক্ত মেলে। এ ছাড়া স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, ২৩ জানুয়ারির মতো দিনগুলিতে শিবির আগে থেকে নির্ধারিত থাকে।
হাসপাতালের কর্তারা জানান, বছরের শুরুতেই কোন-কোন সময় কতটা রক্ত পাওয়া যাবে, সেই ছক তৈরি করা হয়। প্রতি মাসে নিয়ম করে ১২-১৮টি শিবির করা হয়। সেখান থেকেই পর্যাপ্ত রক্ত মিলে যায়। এ বছর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অগস্টে ১৮টি ও সেপ্টেম্বরে ১২টি শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করে। কালনা ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, বহু সময়ে রক্তদাতাদের ইচ্ছা সত্ত্বেও আমরা রক্ত নিতে পারি না।’’
কালনা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘যাঁরা ভাল ভাবে রক্তদান শিবির পরিচালনা করেন তাঁদের পুরস্কৃত করা হয় বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে। সারা বছর ভাল রক্তের জোগানের কারণে অন্য জেলাতেও রক্ত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।’’