ক্ষোভ পরিজনের। নিজস্ব চিত্র।
এক সদ্যোজাতের মৃত্যুতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বুধবার রাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিশুটির পরিবারের লোকজন। পরে, হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন তাঁরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘এসএনসিইউ’ (স্পেশ্যাল নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট)-তে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হচ্ছিল শিশুটির। তা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীরাজ রায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে আমরা শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত, সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার গোবরা পঞ্চায়েতের জুরানপুরের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ ঘোষ ২৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী রিমি ঘোষকে কাটোয়া হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করেন। সে দিনই রিমি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। সদ্যোজাতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ শিশুটির গলায় দুধ আটকে যায়। কর্তব্যরত নার্সদের বারবার সে কথা জানানো হয়। কিন্তু নার্সেরা কোনও কথা শোনেননি, উল্টে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এর পরে, বিকেল ৫টা নাগাদ শিশুটিকে তড়িঘড়ি ‘এসএনসিইউ’ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই পরিজনের ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাতে হাসপাতালের গেটে দাঁড়িয়েই সুপারকে ফোন করে অভিযোগ জানান শিশুর বাবা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা নার্সদের বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা করেননি। আমাদের সঙ্গে নার্সেরা দুর্ব্যবহারও করেছেন। নার্সদের গাফিলতির কারণেই আমাদের কোল ফাঁকা হয়ে গেল!’’ তাঁর স্ত্রী সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এই ঘটনার পরে, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর আত্মীয়দের একাংশের অভিযোগ, কাটোয়া হাসপাতালে কিছু নার্সের দুর্ব্যবহারের প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। রোগীর কোনও সমস্যার কথা জানাতে গেলে ওই নার্সেরা কোনও কথা না শুনে খারাপ আচরণ করেন বলে তাঁদের দাবি। হাসপাতালের সুপার জানান, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ করা হলে, তা খতিয়ে দেখা হবে।