নো এন্ট্রি, তেড়িয়া শঙ্কু

একা একাই রাস্তা অবরোধ করলেন এক যুবক। আর তার জেরে নাকাল হল গোটা পাড়া। পুলিশ-দমকল এনে তবে মুক্ত হল সেই রাস্তা। সেই অবরোধকারী এখন বর্ধমানের বোরহাটের একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঠিক কী হয়েছিল সে দিন? স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বছর আটাশের শঙ্কু মজুমদারের বাড়ি স্থানীয় নীলপুরের মুচিপাড়া সংলগ্ন সেন্ট্রাল পার্কে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

একা একাই রাস্তা অবরোধ করলেন এক যুবক। আর তার জেরে নাকাল হল গোটা পাড়া। পুলিশ-দমকল এনে তবে মুক্ত হল সেই রাস্তা। সেই অবরোধকারী এখন বর্ধমানের বোরহাটের একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

ঠিক কী হয়েছিল সে দিন?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বছর আটাশের শঙ্কু মজুমদারের বাড়ি স্থানীয় নীলপুরের মুচিপাড়া সংলগ্ন সেন্ট্রাল পার্কে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎই বাড়ির সামনের রাস্তায় আদুল গায়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন তিনি। গলার শির ফুলিয়ে বলতে থাকেন, ‘‘এই রাস্তা আমার। কাউকে এখান দিয়ে যেতে দেব না।’’ প্রথমে বিষয়টি হালকা ভাবেই নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ কেউ ঠাট্টার সুরে তাঁর দাবিকে সমর্থন করে যান। কিন্তু সময় যত বাড়তে থাকে তত বাড়তে থাকে শঙ্কুর জেদ। এক পড়শি মহিলা ওই রাস্তা দিয়ে যেতে চাইলে তাঁকে মারধর করে শঙ্কু। এরপরেই পাড়ার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শঙ্কুকে ঘিরে ফেলে। অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ির ভিতর ঢুকে দোতলার ছাদে উঠে যান শঙ্কু। তার পর নীচের ভিড় লক্ষ্য করে ইটের টুকরো ছুঁড়তে শুরু করেন। প্রথমে পিছু হটলেও শঙ্কুকে তাক করেও পাল্টা ইটের টুকরো ছুঁড়তে থাকে পাড়ার লোকজন। গ্রিল কাটার যন্ত্রও আনা হয়। পরিস্থিতি সামলাতে খবর দেওয়া হয় বর্ধমান থানায়।

Advertisement

পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে ছাদের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে শঙ্কুকে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা! পুলিশ দেখে শঙ্কুর হাঁক়ডাঁক উল্টে দ্বিগুন হয়ে যায়। ইট ছোঁড়া চলতেই থাকে। তখন র‌্যাডার নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকল। তাতেও থামানো যায়নি অসম রাইফেলের প্রাক্তন ওই কর্মীকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়ির ছাদে র‌্যাডার লাগানো সঙ্গে সঙ্গেই ইটের টুকরো এসে লাগে এক দমকল কর্মীর হেলমেটে। একের পর এক ইটের ঘায়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির কাঁচের জানলা ভেঙে যায়। পুলিশের পরে দমকল কর্মীরাও পিছিয়ে আসেন।

কয়েক ঘণ্টা পরে ক্লান্ত শঙ্কু নিজেই বাড়ির নীচে নেমে আসেন। সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির সামনে জমাট বাঁধা ভিড়টা ঝাঁপিয়ে পড়ে শঙ্কুর উপর। চলে চড়-থাপ্পড়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত পাল, শৌভিক রায়, পার্থ বর্মণেরা বলেন, ‘‘শঙ্কু আগেও পড়শিদের মারধর করেছে। ওর ভাল করে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন।’’ শঙ্কুর পরিজনেরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কয়েক দিন কলকাতায় মানসিক চিকিৎসা চলছিল শঙ্কুর। কিন্তু কয়েক দিন আগে সেখান থেকে পালিয়ে এসেছেন তিনি।

তারপরেই এই কাণ্ড।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন