‘জনসংযোগে’র রঙে থাকল সৌজন্যও

বৃহস্পতিবার আসানসোলের শতাব্দী শিশু উদ্যানে আয়োজিত দোল উৎসবে সপরিবার প্রায় ঘণ্টা তিনেক রং খেলেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০০:১২
Share:

আসানসোলের শতাব্দী শিশু উদ্যানে উৎসবে বাবুল সুপ্রিয়। —নিজস্ব চিত্র

ভোট-বসন্তে জেলার আকাশে উড়ল সবুজ, লাল, গেরুয়া-সহ নানা রং। সে রং নিছক আবিরের নয়, বরং রাজনীতিরও, মনে করছেন জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার রং-খেলার সঙ্গে কোনও প্রার্থীকে দেখা গেল ছন্দে পা মেলাতে। কেউ বা গাইলেন গান। তবে সব পক্ষেরই দাবি, এ সবই ‘অরাজনৈতিক’। সেই সঙ্গে দেখা গেল, সৌজন্য প্রকাশও।

Advertisement

বৃহস্পতিবার আসানসোলের শতাব্দী শিশু উদ্যানে আয়োজিত দোল উৎসবে সপরিবার প্রায় ঘণ্টা তিনেক রং খেলেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। সেখানে ‘ওরে গৃহবাসী খোল্‌, দ্বার খোল্‌, লাগল যে দোল’ পরিবেশন করেন গায়ক-সাংসদ। ছিল, জনপ্রিয় হিন্দি গানের পরিবেশনাও। ওই উৎসবে দুর্গাপুরেরও বিজেপি নেতা, কর্মীদের অনেককে যোগ দিতে দেখা যায়। দিনটির প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে বাবুল বলেন, ‘‘এই দিনটা রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সবার এক হওয়ার দিন।’’ সেই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘মুনমুনদি-কে আমি ২৫ বছর ধরে চিনি। যখন আমি বাবুল সুপ্রিয় হইনি, তখন থেকেই চিনি তাঁকে। আমি জানি উনি আজ আসানসোলে আছেন। মুনমুনদি-কে আসানসোলে স্বাগত। তাঁকে দোলের শুভেচ্ছা জানাই।’’

বৃহস্পতিবার দলের জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত দোল উৎসবে যোগ দেন মুনমুন। বাবুলের শুভেচ্ছা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আসানসোলের সব মানুষই স্বাগত জানাচ্ছেন।’’ ওই উৎসবে যোগ দেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি, তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন প্রমুখ।

Advertisement

আসানসোলে দলীয় কার্যালয়ে মুনমুন সেন। —নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুরেও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছিলেন নিজের ওয়ার্ডে। প্রভাতফেরি, বি-২ বাজার মোড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা। এমনকি, প্রভাতফেরির পদযাত্রায় গানের সুরে তাল ঠুকতে দেখা যায় বিদায়ী সাংসদকে। অন্য এক জায়গাতেও দোলের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায় দুর্গাপুরের প্রাক্তন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও বিদায়ী সাংসদকে। পাশাপাশি, ছোটদের সঙ্গেও মমতাজ উৎসবে মাতেন। এ সব কী জনসংযোগের জন্য? প্রশ্ন করতেই মমতাজ বলেন, ‘‘আজ ভোটের কথা নয়। শুধু আনন্দ করার দিন।’’ সগড়ভাঙাতেও বসন্ত উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

কুমারমঙ্গলম পার্ক ও এবিএল টাউনশিপের বসন্ত উৎসবে যোগ দিতে দেখা যায় সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারকে। কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীকেও কুমারমঙ্গলম পার্কের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থীর সমর্থনে আভাস রায়চৌধুরীর ছবি দেওয়া দোলের শুভেচ্ছা-বার্তা হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন সিপিএম কর্মীরা। ওই দিন অণ্ডালের শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারি, দক্ষিণখণ্ড গ্রাম, আসানসোলে দলের কার্যালয়ের সামনে দোল খেলতে দেখা যায় আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়কেও। এ ছাড়াও নানা জায়গায় দোল উৎসবে যোগ দিতে দেখা যায় বংশগোপাল চৌধুরী, রুনু দত্ত-সহ সিপিএম নেতৃত্বকে। সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এ সবই শুভেচ্ছা বিনিময়ই উদ্দেশ্য।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন