Manteswar

মেলায় বেধড়ক মার পুলিশকে, গ্রেফতার ১১

‘অশালীন’ নাচের আসরও বসেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:০৬
Share:

আহত পুলিশকর্মীকে আনা হয়েছে বর্ধমানে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অনুমতিহীন মেলায় মাইক বাজানো ও জুয়ার ঠেক চলার অভিযোগ উঠেছিল। সে সব বন্ধ করতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশ। বুধবার রাতে মন্তেশ্বরের পুটশুড়ির মথুরাপুর ও হাজরাপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই ঘটনায় দু’জন এএসআই এবং এক সিভিক ভলান্টিয়ার গুরুতর আহত হন। পুলিশের উপরে হামলায় জড়িত সন্দেহে এগারো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানা থেকে কোনও অনুমতি না নিয়েই বুধবার ওই গ্রামীণ মেলার আসর বসানো হয়। এলাকা থেকে অভিযোগ মেলে, পরীক্ষার মরসুমে মেলায় মাইক বাজানো হচ্ছে। জুয়ার ঠেক চলছে। সেই সঙ্গে ‘অশালীন’ নাচের আসরও বসেছে বলে অভিযোগ। মন্তেশ্বর থানা থেকে দু’টি গাড়িতে ১৩ জনের বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশ সূত্রের দাবি, জুয়ার আসর থেকে লোকজনকে গ্রেফতার করতে যেতেই বচসা বেধে যায়। অভিযোগ, মেলা কমিটির এক সদস্য মাইকে পুলিশকে প্রতিরোধ করার ডাক দেন। এর পরেই এলাকা তেতে ওঠে। বেশ কিছু মহিলা-সহ লোকজন পুলিশের উপরে চড়াও হয়। লাঠি, রড দিয়ে মারধরে আহত হন জনা বারো পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে এএসআই প্রশান্ত প্রামাণিক ও মহম্মদ ইদ্রিস শেখ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার অরিন্দম ঘোষাল বেশি চোট পান।

Advertisement

পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে খবর পেয়ে মন্তেশ্বর থানা থেকে বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের মন্তেশ্বর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তিন জনকে বর্ধমানের এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মাথায় গুরুতর চোট থাকায় এএসআই প্রশান্তবাবুকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ওই দুই গ্রামের পরিবেশ ছিল থমথমে। মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর ভাঙা চেয়ার ও জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দার পাল্টা দাবি, পুলিশ এসে জুয়ার ঠেক বন্ধ করে। কিন্তু অশালীন নাচ-গান নয়, মঞ্চে বাউলগান ও কবিগানের আসর বসেছিল। তা বন্ধ করতে বলা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ এসে মেলায় দোকানপাট ভাঙচুর, কয়েকটি বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। ধরপাকড়ের সময়ে মেলায় বিক্রিবাটা করতে আসা কয়েকজনকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ কোনও তাণ্ডব চালায়নি।’’ পুলিশ জানায়, রাতেই ছয় মহিলা-সহ মোট এগারো জনকে ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ বারোটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু বক্স, মাইক ও জুয়ার বোর্ড। ধৃতদের বৃহস্পতিবার কালনা আদালতে তোলা হলে মহিলাদের ১৪ দিন জেল হেফাজত ও পাঁচ পুরুষ অভিযুক্তকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতের রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযুক্তেরা অবশ্য দাবি করে, তারা গোলমালের সঙ্গে জড়িত নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন