অভয় দিতে বাড়িতে শিক্ষিকারা

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পায়েল দেবনাথ অবশ্য এ দিন স্কুলে আসেননি। জানা যায়, বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ছুটি নিয়েছেন তিনি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৫
Share:

ঢোলা গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

বাইরে বোমাবাজি। বৃহস্পতিবার সেই তাণ্ডবের সময় ক্লাসঘরে দরজা-জানালা বন্ধ করে বসেছিলেন গলসি ১ ব্লকের ঢোলা অবৈতনিক প্রাথমিক পড়ুয়া, শিক্ষিকারা। পরে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। কিন্তু রাত পেরিয়েও আতঙ্ক কাটেনি।

Advertisement

শুক্রবার সকাল ১০টার আগেই স্কুলে হাজির হন গলসি পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরির্দশক দফতরের এক কর্মী নবকুমার ভট্টাচার্য। পড়ুয়ারা তখনও আসেনি। শিক্ষিকাদের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ করেন তাঁরা। ১১টার পর থেকে স্কুলে আসে অনেকেই। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬৫ জনের মধ্যে ৪১ জন পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল। সম্পূর্ণ ক্লাস, মিড-ডে মিল সবই হয়েছে নিয়ম মেনে। দিনভর স্কুলের সামনে ছিল পুলিশের টহলও।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পায়েল দেবনাথ অবশ্য এ দিন স্কুলে আসেননি। জানা যায়, বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ছুটি নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্কুল চলাকালীনই গোলমাল বাধে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। স্কুল চত্বরে পরপর বোমা পড়ে। পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাসঘরে ঘণ্টাখানেক আটকে ছিলেন শিক্ষিকারা। পরে পুলিশ আসে। তবে গ্রামের অনেকেই ঘটনার পরে বাড়িছাড়া। থমথমে পরিবেশ। এ দিন দেরি করে মেয়েকে স্কুলে পৌঁছতে আসেন রিম্পা বেগম। তিনি বলেন, “ভয়ে স্কুলে আসতে চাইছিল না মেয়ে। শিক্ষিকারা বাড়িতে গিয়েছিলেন বলেই মেয়েকে নিয়ে এলাম।” অনেকে আবার ছেলেমেয়েদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, গ্রামে আগে শান্তি ফিরুক। তবেই ছেলেমেয়েদের বাড়িতে ফেরাব। গৃহবধূ সাহিলা বেগম ও আজমীরা বেগমেরা বলেন, “ছেলেমেয়েরা বোমার শব্দে খুব ভয় পেয়েছে। ভয় কাটাতে অন্য পরিবেশে পাঠিয়েছি।’’

এ দিন স্কুলে এসেছিলেন দুই শিক্ষিকা তৃপ্তি ঘোষ ও মোনালি দে। তাঁরাও বলেন, “পড়ুয়াদের মনে ভয় রয়েছে। আমরাও আতঙ্কে আছি। অনেকেই স্কুলে আসতে চাইছিল না। অভিভাবকেরাও স্কুলে পাঠাতে চাইছিলেন না। তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেকে এনেছি পড়ুয়াদের।’’ স্কুলে মিড-ডে মিলের দুই রাধুনি খয়রুন্নিশা শেখ ও দেলোয়ার বেগমও আতঙ্ক কাটিয়ে কাজে আসেন। পড়ুয়াদের জন্য রান্না হয় ভাত, ডাল, আলু-পোস্ত।

নবকুমারবাবু বলেন, “আতঙ্ক কাটিয়ে ছেলেমেয়েরা যাতে স্কুলে আসতে পারে, সে জন্যই স্কুলে এসেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন