গাছতলায় কার্যালয়, পরে বৈঠকে সমাধান

পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগ ছিল, সরকারি নানা প্রকল্পের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষদের বঞ্চিত করছেন বিডিও এবং ব্লক প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩৯
Share:

অস্থায়ী অফিস। নিজস্ব চিত্র

গত সপ্তাহ থেকেই বিডিও-র বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ চলছে। সোমবার কার্যালয় ‘বয়কট’ করে গাছতলায় চলল কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষেরা সাধারণ মানুষের নানা প্রয়োজন মেটান। ৪টে নাগাদ তাঁদের নিয়ে বৈঠকে বসেন কালনার মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি। ঘণ্টা দুয়েক পরে দু’পক্ষের দাবি, মঙ্গলবার থেকে মিলেমিশে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘আশা করি, এমন পরিস্থিতি আর তৈরি হবে না।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগ ছিল, সরকারি নানা প্রকল্পের সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষদের বঞ্চিত করছেন বিডিও এবং ব্লক প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক। পঞ্চায়েত সমিতিকে অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। শুক্রবার মহকুমাশাসককে লিখিত অভিযোগ করেও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা কপ্তি জানান, সরকারি পরিষেবা কেন পাচ্ছে না তা নিয়ে ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিককে প্রশ্ন করা হলে তাঁতে চরম ‘দুর্ব্যবহারে’র শিকার হতে হয়েছে। ওই আধিকারিক ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে প্রবেশ করবেন না এবং সরকারি কোনও সুবিধে নেবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

এ দিন ব্লক অফিস থেকে দু’শো মিটার দূরে তেঁতুলগাছের তলায় টেবিল পেতে অস্থায়ী কার্যালয় খোলেন কর্মাধ্যক্ষেরা। বাঁশের খুঁটি পুঁতে অস্থায়ী কার্যালয়ের ফ্লেক্স টাঙানো হয়। জন্মের শংসাপত্র, রেশন কার্ডের জন্য আবেদন, ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন ফর্মে সই করেন সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষেরা। বেলা বাড়তে হাজির হন আটটি পঞ্চায়েতের প্রধানেরাও। তেঁতুলতলায় বসেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিডিওকে একটি চিঠি লিখে রূপশ্রী এবং বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে যাঁদের নাম বাতিল করা হয়েছে তাঁদের তালিকা চান।

Advertisement

খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মহকুমাশাসক হাজির হন ব্লক অফিসে। টেলিফোনে কথা বলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে। তিনি আলোচনার জন্য ডাকলেও প্রথমে রাজি হননি সভাপতি। তিনি জানান, স্কুল বা স্থানীয় যে কোনও জায়গায় বৈঠক হতে পারে। এর পরে মহকুমাশাসক বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান তাঁদের। ডাকা হয় দুর্ব্যবহারে অভিযুক্ত আধিকারিককেও। ঘণ্টা দুয়েক বৈঠক চলে। পরে কর্মাধ্যক্ষেরা জানান, ঠিক হয়েছে এ রকম আচরণ আর ওই সরকারি কর্মচারী করবেন না। আজ, মঙ্গলবার থেকে মিলেমিশে সবাই কাজ করবেন। মহকুমা প্রশাসনের তরফেও পঞ্চায়েত সমিতির গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিডিও মিলন দেবগড়িয়া অবশ্য এ দিন বিষয়টি নিয়ে তেমন মুখ খুলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমার তরফে কোনও রকম অসহযোগিতা এবং নিয়ম ভেঙে কাজ করার ঘটনা ঘটেনি। গোটা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট পাঠিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন