ধৃত নেতাকে নিয়ে রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ তৃণমূলে

তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে ঢুকে কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত দলীয় কাউন্সিলর হিরা বাউড়ির ব্যাপারে স্থানীয় নেতাদের রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয় কাউন্সিলরকে। তবে ঘটনার প্রায় দেড় দিন পরেও আতঙ্ক কাটেনি ওই তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের কর্মীদের। হিরা বাউরির বিরুদ্ধে গত দু’বছরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিবাদ মেটানোর নামে ডেকে মহিলাকে মারধর, এমনকী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৬
Share:

তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে ঢুকে কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত দলীয় কাউন্সিলর হিরা বাউড়ির ব্যাপারে স্থানীয় নেতাদের রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয় কাউন্সিলরকে। তবে ঘটনার প্রায় দেড় দিন পরেও আতঙ্ক কাটেনি ওই তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের কর্মীদের।

Advertisement

হিরা বাউরির বিরুদ্ধে গত দু’বছরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিবাদ মেটানোর নামে ডেকে মহিলাকে মারধর, এমনকী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে হামলার ঘটনার পরে তৃণমূল তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার পরে দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুলিশের পাশাপাশি দলের তরফেও এই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের কাজকর্ম নিয়ে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন অপূর্ববাবু। শুক্রবার তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে দলীয় স্তরে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গাঁধী মোড়ে ওয়েবেল তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক চত্বরে দীপাবলি উপলক্ষে বাজি পোড়াচ্ছিলেন ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার তিন কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময়ে বাজি পোড়ানো নিয়ে বচসা হলে জেরে হিরা বাউড়ি দলবল নিয়ে তাঁদের উপরে চড়াও হন। বাধা দিতে গিয়ে মার খান সংস্থার ডিরেক্টর রীতেশকুমার দ্বিবেদী। রড, ইট দিয়ে সংস্থার একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ফুলের টব লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়। রাতেই পুলিশ হিরা ও তাঁর দুই অনুগামীকে আটক করে। পরে তাদের গ্রেফতার করে ধৃতদের বিরুদ্ধে মারপিঠ, গুন্ডামি, ভাঙচুর, হুমকি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করে। এর আগে এপ্রিলের মাঝামাঝি স্থানীয় এক মহিলা হিরা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন। সেই মামলাটিও এ দিন সঙ্গে জুড়ে দেয় পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তি পার্কে ঝামেলার মামলায় জামিন পেলেও দ্বিতীয়টিতে ধৃতদের ১৪ দিনের জেল-হাজতে পাঠায় আদালত।

Advertisement

তথ্যপ্রযুক্তি পার্কের ওই সংস্থার ডিরেক্টর রীতেশবাবু জানান, বুধবার রাতের ঘটনার পরে নিরাপত্তা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। তিনি বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কাজকর্ম বন্ধ রাখার উপায় নেই। তাই ঝুঁকি নিয়েও কর্মীরা কাজ করতে আসতে বাধ্য। কিন্তু আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি।” অভিযুক্ত কাউন্সিলর গ্রেফতার হওয়ার পরেও এই আতঙ্ক কেন, সে প্রশ্নে রীতেশবাবুর দাবি, রাজনৈতিক চাপে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করেনি। তাই সেই মামলায় জামিন মঞ্জুর হয়ে যায়। তাঁর আরও ক্ষোভ, “অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও এখনও পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি। তাই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আমরা চিন্তিত।” পুলিশ অবশ্য রীতেশবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে মামলার ধারা দেওয়া হয়। এই ঘটনাতেও তাই করা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজন মতো অভিযোগকারীদের সঙ্গে নিশ্চয় কথা বলা হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement