West Bengal News

মনোনয়ন জমা দিতে কাউকে বাধা দিচ্ছি না, সব বাজে কথা: সুব্রত

টানা পাঁচ দিন ধরে উত্তাল হয়ে রয়েছে গ্রাম-বাংলা। প্রায় সব জেলা থেকে হিংসার খবর আসছে। মনোনয়নপত্রই যাতে জমা দিতে না পারেন বিরোধী প্রার্থীরা, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। সবকটি বিরোধী দল এই অভিযোগ করছে। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সব অভিযোগই উড়িয়ে দিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:১৫
Share:

পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে শাসক দলের তাণ্ডবের কথা মানছেনই না পঞ্চায়েত মন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল কোনও অশান্তি করছে না, বিরোধীদের একেবারেই বাধা দেওয়া হচ্ছে না, খবরের কাগজে ছবি ছাপানোর জন্য অশান্তি পাকানো হচ্ছে। নির্লিপ্ত মন্তব্য পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তৃণমূল যদি বাধাই দিত, তা হলে জেলা পরিষদে তৃণমূলের চেয়ে বেশি সংখ্যক মনোনয়নপত্র কী ভাবে জমা দিল বিজেপি? প্রশ্ন পঞ্চায়েত মন্ত্রীর।

Advertisement

টানা পাঁচ দিন ধরে উত্তাল হয়ে রয়েছে গ্রাম-বাংলা। প্রায় সব জেলা থেকে হিংসার খবর আসছে। মনোনয়নপত্রই যাতে জমা দিতে না পারেন বিরোধী প্রার্থীরা, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। সবকটি বিরোধী দল এই অভিযোগ করছে।

সোমবার থেকে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হিংসাত্মক ঘটনাও শুরু হয়ে গিয়েছে সোমবার থেকেই। বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে, রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছে, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে রাজ্যপাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, নির্বাচন কমিশনারকে পদক্ষেপ করতে বলেছেন। কিন্তু হিংসায় বিন্দুমাত্র লাগাম পরানো যায়নি। প্রতিদিন বাড়ছে হিংসাত্মক ঘটনার সংখ্যা। মুড়ি-মুড়কির মতো পড়ছে বোমা, চলছে গুলি। বিরোধী দলের প্রার্থীরা ও কর্মী-সমর্থকরা সব জেলায় আক্রান্ত হচ্ছেন

Advertisement

বৃহস্পতিবার সিপিএম-এর প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের মাথা ফেটেছিল। শুক্রবার আক্রান্ত হলেন আর এক প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভায় সিপিএমের প্রাক্তন দলনেতা বাসুদেব আচারিয়া। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। বিজেপি-র রাজ্য স্তরের নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছেন বাঁকুড়া জেলাশাসকের দফতরের কাছে। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি নেতা শ্যামাপদ মণ্ডলও।

পুলিশ-প্রশাসন সর্বাত্মক ভাবে সহযোগিতা করছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের। দাবি বিরোধী দলগুলির। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় বিডিও অফিস, এসডিও অফিস ঘিরে রেখেছে তৃণমূল, শুক্রবার সকাল থেকে মনোনয়ন পেশ করতে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিরোধীরা বাধা পেয়েছেন, সে ছবি ধরাও পড়েছে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। মুর্শিদাবাদে দুষ্কৃতীদের পাশে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের উপর হামলা চালিয়েছে পুলিশও, দাবি বিজেপির। বীরভূমের নলহাটিতে বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া আটকে দিয়েছে পুলিশই, এমন অভিযোগও উঠেছে।

আরও পড়ুন: আসানসোল-রানিগঞ্জে ব্যর্থ রাজ্য, মমতাকে চিঠি কেশরীর

এত কিছু সত্ত্বেও কোনও অভিযোগই মানতে রাজি নয় রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বললেন, ‘‘যদি বাধা দিতাম, তা হলে জেলা পরিষদে বিরোধীরা আমাদের চেয়েও বেশি মনোনয়নপত্র জমা দিত কী করে? সব বাজে কথা।’’

আরও পড়ুন: দলের বিপদে ময়দানে নমিতা

বুধবার রাত পর্যন্ত জেলা পরিষদ স্তরের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা পড়ার যে হিসেব, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি ৪০টি এবং তৃণমূল ২৯টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। বামেরা ১৯টি এবং কংগ্রেস ১৫টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। সুব্রতবাবু সেই হিসেবের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।

খবরে থাকার জন্য বিরোধীরাই গোলমাল পাকাচ্ছেন, ইঙ্গিত পঞ্চায়েত মন্ত্রীর। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমে যা দেখা যাচ্ছে, তা হল একটা কৌশল। কী কৌশল? সুব্রতর জবাব, ‘‘একটা প্রদেশের নাম বলা যাবে না, সেই প্রদেশের কৌশল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন