কোথাও গুলি-বোমা। কোথাও ভোজালি-চপার। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপসৃষ্টির বহরে আতঙ্ক বাড়ছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
শনিবার উত্তর দিনাজপুরে কয়েক দফায় সংঘর্ষের পরে রাতে কোচবিহারের দিনহাটা ও মাথাভাঙায় অশান্তি শুরু হয়। রবিবারও দিনভর গোলমাল চলে। চোপড়ায় শাসকদলের হামলায়় এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটেছে। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। কোচবিহারের ফুলবাড়ি ও নিশিগঞ্জে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিছিল করার অভিযোগ উঠেছে। চোপড়ায় ১২ জন ও কোচবিহারে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তা সত্ত্বেও আতঙ্ক কাটছে না কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরের কিছু এলাকায়। জামিনযোগ্য ধারা দেওয়ায় ধৃতদের মধ্যে চার তৃণমূল সমর্থক অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
রাতে মাথাভাঙায় তৃণমূল নেতা বাবলু সরকারের হাতের আঙুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন অভিযোগ করেন, রাতে বাড়ি ফেরার সময় ওই অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সভাপতি বাবলু সরকারের পথ আটকে তাকে কোপাতে শুরু করে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। তাঁর শিশুকন্যার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরেই ৫ জন বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। যদিও বিনয়বাবুর পাল্টা দাবি, “তাঁদের কর্মীকে খুনের চেষ্টার পরে বিজেপি নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
শনিবার তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় দিনহাটা। ভেটাগুড়িতে খারিজা বালাডাঙায় যুব তৃণমূলের কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় তৃণমূল প্রার্থীদের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। যুব নেতৃত্বের অভিযোগ, গাজনের মেলা দেখে বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের কর্মীরা আক্রান্ত হন। তবে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা হামলা চালালে স্থানীয় মানুষ প্রতিরোধ করে।”
কোচবিহারের এসপি ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ফুলবাড়ির ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভেটাগুড়ি নিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
রবিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় ইউনসু আলি নামে এক বিজেপি কর্মীর উপর হামলা হয়। তাঁর মাথা ফেটেছে। চোপড়ার দলুয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। উত্তর দিনাজপুরের এসপি শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। টহলদারিও চলছে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।’’