BJP

BJP: ‘টিকিটের জন্য টাকা’  বিজেপিতে, অডিয়ো  ঘিরে বিতর্ক 

অডিয়োটিতে শোনা যাচ্ছে, আসন্ন পুরভোটের টিকিট প্রত্যাশী শতদ্রু মোবাইল ফোনে বিজেপির কাছ থেকে ১২টি আসন চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুরভোটে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিজেপিতে টাকা চাওয়া হচ্ছে, এই মর্মে রবিবার ভাইরাল হওয়া একটি অডিয়ো-সংলাপ ঘিরে দেখা দিল নতুন বিতর্ক। ওই অডিয়ো ক্লিপে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নাম করে দলের এক যুব কর্মীকে এক টিকিট প্রত্যাশীর কাছ থেকে টাকা দাবি করতে শোনা যাচ্ছে। এই অডিয়োকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে তৃণমূল। আনন্দবাজার পত্রিকা ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত অবশ্য এমন অডিয়ো ভাইরাল করা এবং তা বাজারে আনার পিছনে উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

ওই অডিয়ো-সংলাপের শুরুতে শোনা যাচ্ছে, “হ্যাঁ বলো, সকালে ফোন করলে তুমি রাত্রিবেলা ফোন কর (রিং ব্যাক)।” ওই কথাটিতে যাঁর গলা শোনা যাচ্ছে, তাঁর সঙ্গে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা-সেকুলার (হাম)-এর শতদ্রু রায় চট্টোপাধ্যায়ের গলার মিল আছে। শতদ্রু নিজেও পরে বলেছেন, ওটা তাঁরই গলা। শতদ্রু ভবানীপুরের উপনির্বাচনে হাম-এর প্রার্থী ছিলেন। তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে। ওই অডিয়োয় অন্য যাঁর গলা রয়েছে, তাঁর নাম দেখা যাচ্ছে প্রীতম। ওই নামে বিজেপিতে যুব কর্মী আছেন। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

অডিয়োটিতে শোনা যাচ্ছে, আসন্ন পুরভোটের টিকিট প্রত্যাশী শতদ্রু মোবাইল ফোনে বিজেপির কাছ থেকে ১২টি আসন চাইছেন। উল্টো দিক থেকে প্রার্থী পিছু এক লক্ষ টাকা করে চাওয়া হচ্ছে। শতদ্রু অত টাকা দেওয়ার অক্ষমতা জানিয়ে টাকা কমানোর অনুরোধ করছেন। অপর পক্ষ জানাচ্ছেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তকে রাজি করাতে হবে তাঁকে। এমনকি, শতদ্রুকে ভাল আসন পাইয়ে দেওয়া এবং তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া করে জেতানোর চেষ্টা করার আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে অপর পক্ষের তরফে।

Advertisement

গোটা অডিয়ো-সংলাপ নিয়ে শতদ্রুর বক্তব্য, “এটা সম্পূর্ণ ভিতরের ব্যাপার। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও জানেন। আমরা কাল বা পরশু এ নিয়ে বিবৃতি দেব। বিষয়টি আমাদের কাছে আসতেই আমরা হাম এবং বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। কারণ, আমরা এনডিএ-র শরিক দল। এ রাজ্যেও কলকাতা এবং হাওড়ার পুরভোটে আমরা জোটের জন্য এগোচ্ছি।”

বিষয়টি নিয়ে সুকান্ত বলেন, “রাস্তায় কোনও লোক যদি বলেন সুকান্ত মজুমদারকে টাকা দিয়ে দেব, আমার চাকরি হয়ে যাবে, বিশ্বাস করবেন নাকি? পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়? বিজেপির প্রার্থী-পদ এক জন ব্যক্তি ঠিক করেন না। তাই এক জন ব্যক্তি কারও কাছ থেকে টাকা নিলেও প্রার্থী-পদ দিতে পারবেন না। তৃণমূল বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার জন্য কাউকে দিয়ে ভিডিয়ো বানিয়ে এটা করছে। ওই অডিয়োয় যাঁকে টাকা চাইতে শোনা যাচ্ছে, তিনি আগে তৃণমূল করতেন। তিনি এক সময়ে দিদির হয়ে মেলা, খেলা, চলচ্চিত্র উৎসব করেছেন। জানি না তাঁরই গলা কিনা।”

এ দিকে, ওই অডিয়ো-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের কটাক্ষ, “বিজেপির কোনও নীতিবোধ নেই। টাকা, মাদক এবং নারী পাচার-সহ নানা কেলেঙ্কারি বিজেপিতে চলে। যারা কেবল গুন্ডামি এবং দাঙ্গা করতে চায়, তারা আর করবেটা কী?”

পেট্রোপণ্যে রাজ্য সরকারে ভ্যাট কমানোর দাবিতে সুকান্তর নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা এ দিন বারুইপুরে বিক্ষোভ করেন। সেখানে সুকান্ত বলেন, “রাজ্য সরকার পেট্রল, ডিজেলের ভ্যাট না কমালে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা পুলিশ-প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, হাজার হাজার বিজেপি কর্মী নবান্নের ১৪ তলায় ঘিরে ধরবেন। তাতেও কাজ না হলে অনশনের পথে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন