Abhishek Banerjee

মোদী-শাহ নন, বিজেপি কর্মীরা সুকান্ত-শুভেন্দুর চেয়েও বেশি ভরসা করেন তাঁকে, দাবি অভিষেকের

রবিবার রায়নার কাইতি ফুটবল মাঠের জনসভায় পৌঁছে প্রথম থেকেই বিজেপির ওপর খড়্গহস্ত হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, বিজেপি কর্মীরাও সমস্যার সমাধানের জন্য তাঁর কাছে আসছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৩ ১৯:২৭
Share:

রায়না যাওয়ার পথে রাস্তায় বিজেপি কর্মীর সঙ্গে কথা বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

মোদী-শাহ নয়, সুকান্ত-শুভেন্দুও নয়। বিজেপি কর্মকর্তা আমার কাছে সাহায্য চেয়েছেন। এমনটাই দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দুপুরে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা পৌঁছয় রায়না। সেই রায়নার কাইতি ফুটবল মাঠের জনসভায় পৌঁছে প্রথম থেকেই বিজেপির ওপর খড়্গহস্ত হন অভিষেক।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘আজ আমি জামালপুরের ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে ওই রায়নার দিকে আসছিলাম। খুব বেশি হলে ৩০-৩৫ কিলোমিটার রাস্তা। গাড়িতে আমার এখানে আসতে এখানে সময় লাগত আধ ঘণ্টা। আমার ২ ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। কারণ রাস্তার চারিদিকে মানুষ। অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘‘আসার সময় এক যুবক আরএসএস করে। বলল দাদা আমি বিজেপির কার্যকর্তা। আমাদের এখানে একটা ল্যাম্প পোস্টের দরকার ছিল। এখানে লাইটের খুব প্রয়োজন, ব্যবস্থা করে দেবেন? আমি বললাম তুমি আবেদন জমা দাও, আমি আমার সীমাবদ্ধ এক্তিয়ারের মধ্যে যা আছে করব। আপনি দেখুন বিজেপির একজন কার্যকর্তা সে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, মোদীকে দিচ্ছে না, অমিত শাহকে দিচ্ছে না। কারণ সমাধান যদি কেউ করতে পারেন, তাহলে তা তৃণমূলই করতে পারে।’’ তাঁর আরও দাবি, আরএসএসে উর্দিতে সেই বিজেপি কর্মী তাঁর কাছে এসেছিলেন।

নিজের জনসংযোগ যাত্রার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘কিছু বেনোজল ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি ঢুকে গেছিল। সেই সব বেনোজলকে চিহ্নিত করে বাইরে বের করার কাজের নামই হচ্ছে তৃণমূলের নবজোয়ার। জোয়ার যখন আসে, তখন নদীর ধার থেকে আবর্জনা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তৃণমূলের নবজোয়ারও সেই কর্মসূচি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের খেটে খাওয়া প্রতিনিধি চাই। যার হয়তো আপনাক কাজ করা ক্ষমতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি আপনার সমস্যার সমাধান করে আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগী হবে। আমরা এমন প্রতিনিধি চাই যারা দলমত নির্বিশেষে মানুষের জন্য কাজ করবে।’’

Advertisement

বিজেপির কর্নাটকের পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে বাংলায় এসে বলেছিল দিদি ২০২৫ সালে আপনার সরকার শেষ। আর আমরা কি দেখলাম, কর্নাটকে ডাবল ইঞ্জিন সরকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। দক্ষিণ ভারত থেকে মুছে গিয়েছে। পূর্ব ভারতেও বিজেপি নেই। আছে শুধু মধ্য ও পশ্চিম ভারতে। তাও শেষের শুরু হয়ে গেছে, চলে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ২০২১ সালের বাংলার নির্বাচনে পরাজয়ের পরেই বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাওনা আটকে দিয়েছে। অভিষেকের কথায়, ‘‘পিএমজিএসওয়াইয়ের টাকা। রাস্তার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ তো জানেন না প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন বাংলায় হারের পর। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ির টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৫ মার্চ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে সাংসদদের নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রী থেকেও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। মন্ত্রীর সচিব মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন, যে বাংলা থেকে বিজেপি সাংসদরা বলেছেন বাংলাকে টাকা না দিতে। বাংলার মানুষের টাকা আটকে রাখছ কেন? তৃণমূল আপনাদের হারিয়েছে, তৃণমূলের ওপর আপনাদের রাগ। কিন্তু বাংলার মানুষের ওপর আমার রাগ কিন্তু বাংলার মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না।’’

আগামী দিনে যদি রাজ্য সরকার তার পাওনা না পায় তবে কৃষি ভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক। রায়নার জনসভায় অভিষেক জানান, ইতিমধ্যে ১২ লক্ষ চিঠি তাঁর কাছে এসেছে। দু’মাস পর এক কোটি চিঠি নিয়ে তিনি দিল্লিতে আন্দোলন করতে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন