সতীশ কুমার। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার-কাণ্ডে ধৃত বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে পেল সিবিআই। মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর আজ বুধবার তাঁকে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এক একটি ‘কনসাইনমেন্ট’ থেকে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পেতেন সতীশ। গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে সেই টাকা সতীশ অন্যের অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলতেন বলেও জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
মঙ্গলবার টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর কলকাতায় নিজাম প্যালেসে গ্রেফতার হন সতীশ। তার পর এ দিন তাঁকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সিবিআই-এর আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র বলেন, ‘‘আমরা ১৪ দিনের হেফাজত চেয়েছিলাম। আদালত তা মঞ্জুর করেছে।’’ তদন্ত চলছে বলে এ বিষয়ে আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
তবে সতীশের আইনজীবী শেখর কুন্ডু বলেন, ‘‘এফআইআর-এর ক্ষেত্রে সতীশ কুমার কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। হাতেনাতে ধরাও পড়েননি তিনি। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে সিবিআই এই মামলা চালাচ্ছে।’’
সিবিআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গ্রেফতারের আগে এবং তার পর থেকে আদালতে তোলা পর্যন্ত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীরা বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। তদন্তে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে গরু পাচারের এক একটি ‘কনসাইনমেন্ট’-এর আগে বিভিন্ন ঘাঁটিতে ছোট বৈঠক হত। সেই বৈঠকে বিএসএফ-এর নিচুতলার কিছু কর্মীও হাজির থাকতেন বলে সূত্রের খবর। রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না সিবিআই-এর গোয়েন্দারা।
তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, এক একটি ‘কনসাইনমেন্টে’ ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পেতেন সতীশ। এই টাকার একটি অংশ নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেও বাঁটোয়ারা হত। আর সতীশ যে টাকা পেতেন, সেই টাকা স্ত্রী, ভাই বা পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতেন সতীশ।
যদিও সতীশের আইনজীবীর দাবি, ‘‘যদি সেই রকম অভিযোগ থাকে অর্থাৎ সতীশ টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন, তা সিবিআই-কে প্রমাণ করতে হবে আদালতে।’’