Calcutta High Court

বিচারের দীর্ঘসূত্রতাই কারণ! ৩৯ বছরের পুরনো মামলায় দোষীর সাজা প্রায় মকুবই করল হাই কোর্ট

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দ্রুত এবং সঠিক বিচার পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। বিচার এত দেরিতে হলে সেই অধিকার লঙ্ঘিত হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৫ ২২:৩৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

বিচারের দীর্ঘসূত্রতা শাস্তি কমানোর জন্য যথেষ্ট। বিচারের কাজে দেরি মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। ৩৯ বছর আগের ঘটনায় দোষ প্রমাণিত হলেও অভিযুক্তকে ‘কার্যত’ শাস্তি দিল না কলকাতা হাই কোর্ট। ন’দিনের জেল খাটাতেই সন্তুষ্ট আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের পর্যবেক্ষণ, এত দীর্ঘ সময় ধরে অভিযুক্তকে আইনি লড়াই করতে হয়েছে। সেটাই শাস্তির সমান। কারণ, এর জন্য তাঁকে মানসিক কষ্ট এবং যন্ত্রণা পেতে হয়েছে। তা ছাড়া সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দ্রুত এবং সঠিক বিচার পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। বিচার এত দেরিতে হলে সেই অধিকার লঙ্ঘিত হয়। তাই আদালত মনে করছে, অভিযুক্ত অপরাধ করেছে সেটা প্রমাণিত হলেও, দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে বিচারের দীর্ঘসূত্রতা তাঁর শাস্তি লঘু করার একটি বড় কারণ।

Advertisement

১৯৮৬ সালের জুন মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে নিজের দোকান এবং গুদাম ঘরে ২১৯ লিটার কেরোসিন তেল এবং ডিজেল অবৈধ ভাবে মজুত রেখেছিলেন স্বপনকুমার বেরা। অভিযোগ, এর জন্য তাঁর কাছে কোনও লাইসেন্স বা অনুমোদন ছিল না। দাসপুর থানায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আইনে স্বপনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ১৯৮৮ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তের ছ’মাসের জেল এবং জরিমানা হয়। ন’দিন জেলে খেটে জামিনে মুক্ত হন তিনি। পাশাপাশি, ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করেন স্বপন। রাজ্যের বক্তব্য, আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তির ১০ লিটারের বেশি কেরোসিন তেল রাখার অনুমতি নেই। সেই জায়গায় ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২১৯ লিটার কেরোসিন তেল।

মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করে হাই কোর্ট জানায়, বৈধ লাইসেন্স বা অনুমতি ছাড়াই এত তেল মজুত রাখা আইনবিরুদ্ধ। অভিযুক্তের অপরাধ প্রমাণিত। তবে ৩৯ বছর ধরে এই মামলা চলার কারণে তাঁকে আর শাস্তি দেওয়া হবে না। এ ছাড়া ওই ব্যক্তি জামিনে থাকা অবস্থায় কোনও অপরাধ করেননি। হাই কোর্টের রায়, অপরাধ প্রমাণিত হলেও দোষীর সাজা কমিয়ে দেওয়া হল। তাঁর ন’দিনের জেল জীবনে আদালত সন্তুষ্ট। তবে তাঁকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হল। ওই টাকা না দিলে এক মাস সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement