Sutapa Chowdhury Murder Case

সুতপা খুনের মামলায় অপরাধী প্রেমিক সুশান্তের ফাঁসির সাজা রদ করল হাই কোর্ট, ৪০ বছর জেলের সঙ্গে হল জরিমানা

২০২২ সালের ২ মে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের মেসে ফিরছিলেন কলেজছাত্রী সুতপা চৌধুরী। সেই সময় রাস্তার উপরেই তাঁকে কুপিয়ে খুন করেন সুশান্ত চৌধুরী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৫ ২২:০৩
Share:

(বাঁ দিকে) সুতপা চৌধুরী এবং সুশান্ত চৌধুরী (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।

নিম্ন আদালত ফাঁসির শাস্তি দিয়েছিল। কিন্তু বহরমপুরে প্রেমিকাকে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় অপরাধী প্রেমিককে বুধবার চরম দণ্ড থেকে রেহাই দিল কলকাতা হাই কোর্ট। অপরাধী সুশান্ত চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল করে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, গ্রেফতারের দিন থেকে ওই যুবক ৪০ বছর সাজা খাটবেন। এ ছাড়া তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। না হলে আরও দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা হবে।

Advertisement

২০২২ সালের মে মাসের ওই খুনের মামলায় ২০২৩-এর ৩১ অগস্ট দোষী সাব্যস্ত হন সুশান্ত। তাঁকে বহরমপুরের তৃতীয় দ্রুত নিষ্পত্তি (ফাস্ট ট্র্যাক) আদালতের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণি থেকে সুশান্তের সঙ্গে নিহত সুতপা চৌধুরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাঁরা মালদহে থাকতেন। পরে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বহরমপুরে পড়তে গিয়েছিলেন সুতপা। তিনি বহরমপুর গার্লস কলেজে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সুতপা বহরমপুর যাওয়ার কিছু দিন পরে সুশান্তের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল। প্রেমিকার পরিবার জানায়, একাদশ শ্রেণিতে একই টিউশনে পড়ত দু’জনে। সেই সময় থেকেই সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে সুশান্তের আচরণে অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। সেই কারণে তাদের মেয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাননি। কিন্তু সুশান্ত নানা ভাবে সুতপাকে উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। পরিবার আরও জানায়, প্রাণঘাতী ওই হামলার আগে অনেক বার সুতপাকে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সুশান্ত। ওই বিষয়ে মালদহ মহিলা থানায় প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোও হয়েছিল।

Advertisement

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সুতপা তাঁকে ‘গুরুত্ব’ না দেওয়ার কারণেই খুন করার সিদ্ধান্ত নেন সুশান্ত। সেই অভিসন্ধি থেকেই বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় সুতপার হস্টেলের কিছুটা দূরে বাড়ি ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন তিনি। সেই সঙ্গে নজরদারি করতে থাকেন প্রাক্তন প্রেমিকার গতিবিধির উপর। ২০২২ সালের ২মে পৌনে ৭টা নাগাদ হস্টেলের সামনে শহিদ সূর্য সেন রোডের উপর সুতপাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন সুশান্ত। ৪৫ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।

খুনের পর সুশান্ত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁকে মালদহের দ্বারভাঙা মোড় থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনায় ২০২৩ সালের ২৯ অগস্ট বহরমপুর আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ৩১ অগস্ট তাঁকে মৃত্যুদন্ডের সাজা দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মঙ্গলবার হাই কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল করে পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ২০০১ সালের ২ নভেম্বর দোষী সুশান্তের জন্ম। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি জঘন্য অপরাধ করেছেন। এখন তাঁর বয়স ২৪ বছর। তাই ফাঁসি রদ করে তাঁকে ৪০ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement