Nabanna Abhijan

‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মৌলিক অধিকার’, নবান্ন অভিযান নিয়ে মামলাকারীর আবেদন মঞ্জুর করল না কলকাতা হাই কোর্ট

শনিবার (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা। সেই অভিযানের বিরোধিতা করে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ২০:৪৫
Share:

নবান্ন অভিযান মামলায় রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সকলের মৌলিক অধিকার। তাই তা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা যায় না। নবান্ন অভিযান নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় জানাল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারীর আবেদন মঞ্জুর না করে উচ্চ আদালত বলে, ‘‘এমন ধরনের প্রতিবাদের উপর কোনও সাধারণ নিষেধাজ্ঞামূলক নির্দেশ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখানে নেই।’’

Advertisement

শনিবারের (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মা। তাঁদের ওই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। শনিবারের ওই কর্মসূচির বিরোধিতা করে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয় বৃহস্পতিবার। সেই শুনানিতে মামলাকারী এবং রাজ্য সরকার, দুই পক্ষই নিজেদের বক্তব্য পেশ করে। কেন তারা নবান্ন অভিযানের বিরোধিতা করছে, তার পক্ষে যুক্তিও দেওয়া হয়। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাই কোর্ট জানায়, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা দিতে পারে না আদালত।

নবান্ন অভিযান সংক্রান্ত মামলায় উচ্চ আদালত নির্দেশে জানায়, ওই কর্মসূচির বিরুদ্ধে মামলাকারী যে অন্তর্বর্তিকালীন (অস্থায়ী) নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন আদালত তা মঞ্জুর করছে না। তার পরেই আদালত বলে, ‘‘এটা স্পষ্ট করতে চাই যে, যাঁরা প্রতিবাদে যোগ দেবেন, তাঁরা যেন আইন মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করেন। পুলিশ, সরকারি কর্মী, সরকারি ভবন বা সম্পত্তির কোনও ক্ষতি না করেন। ভারতীয় সংবিধানেও বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হল সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা এবং হিংসা না করা।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবারের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান এবং দোকান রয়েছে। আমার মক্কেলও হাওড়ার এক জন ব্যবসায়ী। এই ধরনের কর্মসূচিতে অতীতে ব্যাপক গন্ডগোলের উদাহরণ রয়েছে। এ বারও তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় কর্মসূচির উদ্যোক্তারা নেবেন না।’’ তাঁর আবেদন, ‘‘এই সব কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।’’

অপ্রীতিকর এবং হিংসার ঘটনার আশঙ্কা করেছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলও। উদাহরণ হিসাবে গত বারের নবান্ন অভিযানের কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গত বার ৪৭ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। এক জন পুলিশের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৪০ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। আমরা হিংসার পুনরাবৃত্তি চাই না। রাজ্য ইতিমধ্যে প্রতিবাদের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে। যে কেউ যেখানে খুশি প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে পারেন না।’’

পুলিশ শনিবারের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে বিকল্প তিন জায়গার কথাও আদালতে জানায়। সেই তিন জায়গা হল মন্দিরতলা বাসস্ট্যান্ড, হাওড়া ময়দান এবং বঙ্কিম সেতুর নীচে। সেখানে সর্বাধিক কত মানুষের জমায়েত করা যাবে সেটাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে পুলিশের তরফে। সেখানে বলা হয়েছে মন্দিরতলা বাসস্ট্যান্ডে ২০০ জন, হাওড়া ময়দানে ৫০০ জন এবং বঙ্কিম সেতুর নীচে ৫০০ জনের জমায়েত করা যাবে।

সেই বিষয় নিয়ে আদালত নির্দেশে এ-ও বলে, ‘‘পুলিশ ইতিমধ্যে নিষেধাজ্ঞামূলক নির্দেশিকা জারি করেছে। সরকার আইন অনুযায়ী সেই নির্দেশ কার্যকর করতে পারবে এবং প্রতিবাদ আয়োজকদের বিকল্প প্রতিবাদস্থলের বিষয়ে অবহিত করতে পারবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement