TET

TET SCAM: টাকা তোলার নালিশ, বেপাত্তা শিক্ষক

শিক্ষক বছরখানেক আগে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন। সেই সূত্রে মাস দেড়েক জেলও খেটেছিলেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২২ ০৫:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

আপাতত তিনি ‘বেপাত্তা’। মুখ খুলতে রাজি নন তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও। চাকরি দেওয়ার নাম করে টেট পাশ করা তরুণীর থেকে টাকা নেওয়ায় অন্যতম অভিযুক্ত এই প্রাথমিক শিক্ষকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

অভিযুক্ত শিক্ষকের নানা কীর্তিও সামনে আসছে পড়শি ও বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির বয়ানে। তিনি কতটা ‘প্রভাবশালী’ ছিলেন, সেটা বোঝাতে বিভিন্ন উদাহরণ দিচ্ছে বিরোধী সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, ওই শিক্ষক বছরখানেক আগে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন। সেই সূত্রে মাস দেড়েক জেলও খেটেছিলেন। তাদের প্রশ্ন, তার পরেও প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে তাঁর চাকরি বহাল থাকে কী করে? অন্তত সাসপেন্ড তো হওয়াই উচিত। বিরোধীদের অভিযোগ, সেটাও তো হননি। উল্টে অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে গিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে।

জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেন, “কোনও মামলায় কেউ অভিযুক্ত থাকলে তাঁর চাকরি থাকবে কি না, তা নিয়ে আদালতের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে আমি মৌখিক ভাবে ওই শিক্ষকের নামে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”

Advertisement

ক্রান্তির যে প্রাথমিক স্কুলে অভিযুক্ত শিক্ষক চাকরি করেন, তার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কেশব রায় বলেন, “ওই শিক্ষক ১৬ জুন থেকে অসুস্থতার কারণে ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। আমি সেটি জেলা সংসদে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

শিক্ষকের পড়শিদের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি শহরে দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। তাঁরাই জানাচ্ছেন, সদাব্যস্ত ছিল এই শিক্ষকের চালচলন। একটি গাড়ি ও একটি মোটরবাইকে চেপে তাঁকে যাতায়াত করতে দেখা যেত, তা-ও জানিয়েছেন পড়শিরা। তাঁদের আরও দাবি, গাড়িটি সম্ভবত কোনও দেনা মেটাতে বেচে দিতে হয়েছে।

সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে এক মহিলা দাবি করেন, তৃণমূল নেতা সঞ্জীব ঘোষের নির্দেশে তিনি ওই শিক্ষককে ৪ লক্ষ টাকা দেন। টেট পাশ ওই মহিলার দাবি, তাঁকে বলা হয়েছিল, ১২ লাখ টাকা দিলে চাকরি হবে। কিন্তু যখন চাকরিও হল না, আবার টাকাও গেল, তখন তিনি বিষয়টি নিয়ে আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাঁকে অভিযুক্ত শিক্ষক যে চেক দেন, সেটি বাউন্স করে বলেও মহিলার দাবি। মহিলা এ-ও বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই বলতেন, কেউ নাকি তাঁকে কিছু করতে পারবে না। সম্প্রতি মহিলা থানায় অভিযোগ জানান। তার পর থেকেই ওই শিক্ষক বেপাত্তা।

ওই শিক্ষকের পরিবারের সদস্যেরা এখনই সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। তবে এক সদস্যের কথায়, “উনি কি আর একা এ কাজ করতে পারেন? নিশ্চয়ই অনেকেরমদত রয়েছে।”

জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষককে খোঁজা হচ্ছে। সব পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন