প্রয়াত প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আবু হেনা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আবু হেনা। রবিবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ সল্টলেকে নিজের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই সময়ে পরিবারের সদস্যেরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন আবু। বার্ধক্যজনিত কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার তাঁর দেহ কলকাতা থেকে লালগোলায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আবু পেশায় আইনজীবী ছিলেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত লালগোলার কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা থেকে সরে আসে। সেই সময়ে তিনিও ইস্তফা দেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী মুহাম্মদ আলির কাছে প্রথম পরাজিত হন। আবুর বাবা আব্দুস সাত্তার ছিলেন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য।
আবুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি তাঁর সমাজমাধ্যমে লেখেন, “ভাবতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের প্রিয় হেনাদা, আবু হেনা সাহেব আর নেই। গত সপ্তাহেই কলকাতায় দেখা করে এলাম। আশা করেছিলাম, আবার মুর্শিদাবাদে ফিরে আসবেন, আমাদের মধ্যেই থাকবেন, আগের মতোই শক্ত হাতে পথ দেখাবেন। কিন্তু সেই দেখা যে শেষ দেখা হবে, তা কল্পনাও করিনি। দীর্ঘ পথ চলেছি আমরা একসঙ্গে। কত লড়াই, কত প্রতিকূলতা একসঙ্গে পেরিয়ে এসেছি। অনেক ভাল সময়ের সাক্ষী থেকেছি, আবার অনেক খারাপ সময়েও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থেকেছি। সেই প্রতিটি মুহূর্ত যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আর এই কঠিন মুহূর্তে এই প্রথম বার দেখছি, হেনাদা পাশে নেই। তিনি কেবল প্রাক্তন মন্ত্রী বা জেলা কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমার সহযোদ্ধা এবং হৃদয়ের আপনজন। তাঁর আদর্শ ও মতাদর্শের প্রতি দায়বদ্ধতা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। তাঁর জীবনের সততা ও নিষ্ঠা শিক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পরম করুণাময় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি হেনাদা যেন জান্নাতবাসী হন। তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সমস্ত শুভানুধ্যায়ীর প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। আমরা তাঁর স্মৃতি ও আদর্শ বহন করেই লড়াই চালিয়ে যাব। সেটাই হবে আমাদের তরফ থেকে তাঁর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা।”