প্রচারে আবার পৃথক রাজ্যের দাবি গুরুঙ্গের

রাজ্য-রাজনীতিতে হারানো জমি ফিরে পেতে আলাদা রাজ্যের দাবিতে সুর চড়ালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গ। তিনি শনিবার শিলিগুড়িতে মহকুমা পরিষদ ভোটের প্রচারসভায় বললেন, শিলিগুড়ি-সহ তরাই ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকাকে প্রস্তাবিত গোর্খাল্যান্ডে অন্তর্ভুক্তির দাবি থেকে তাঁরা নড়েননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৩
Share:

এক মঞ্চে। মহকুমা পরিষদের ভোট-প্রচারে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সঙ্গে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। শনিবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

রাজ্য-রাজনীতিতে হারানো জমি ফিরে পেতে আলাদা রাজ্যের দাবিতে সুর চড়ালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গ। তিনি শনিবার শিলিগুড়িতে মহকুমা পরিষদ ভোটের প্রচারসভায় বললেন, শিলিগুড়ি-সহ তরাই ও ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকাকে প্রস্তাবিত গোর্খাল্যান্ডে অন্তর্ভুক্তির দাবি থেকে তাঁরা নড়েননি। তাঁর ঘোষণা, ‘‘শীতের সময়ে দিল্লিতে আলাদা রাজ্যের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন হবে। শিলিগুড়ির সমতল এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার মানুষ যোগ দেবেন।’’

Advertisement

ওই প্রচার সভায় উপস্থিত বিজেপির সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া আলাদা রাজ্যের দাবির সমর্থনে কিছু বলেননি। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা তরাই ও ডুয়ার্সের বেশ কিছু এলাকাকে জিটিএ-র আওতায় আনার পক্ষে।’’

আগামী ৩ অক্টোবর শিলিগুড়িতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট। তার প্রাক্কালে গুরুঙ্গ সমতলে নেমে গোর্খাল্যান্ডের জাবিতে সরব হওয়ায় তৃণমূল শিবির খুশি। তাঁদের যুক্তি, এতে সমতলের গোর্খ্যাল্যান্ড-বিরোধী ভোট আরও সুসংহত হবে। তাই ‘বঙ্গভঙ্গ’ রুখতে প্রাণ দেবেন বলে তৃণমূল নেতারা রাতারাতি প্রচারে নেমে পড়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘পাহাড়েও প্রতিরোধ করব। সমতলেও রুখব। বাংলাকে ভাগ হতে দেব না।’’

Advertisement

চলতি মাসের শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে মোর্চা-র সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। জিটিএ-র কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে মোর্চার তিন বিধায়ক ইস্তফা দেবেন বলে গুরুঙ্গ ঘোষণা করেছিলেন। তবে কালিম্পঙের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী মোর্চা ছাড়লেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি। দার্জিলিঙের বিধায়ক ত্রিলোক দেওয়ান পদত্যাগের সঙ্গে মোর্চা ছেড়ে দেওয়ারও ঘোষণা করেছেন। একেও তৃণমূলের ‘‘বিভাজনের রাজনীতি’’ বলে মনে করছেন গুরুঙ্গ। এ দিন মিলন মোড়ের সভার আগে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভাজনের রাজনীতির জন্যই
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি।’’

সভার বক্তৃতাতেও আগাগোড়া রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ-কটাক্ষ করেছেন গুরুঙ্গ। জিটিএ-র কাজে রাজ্যের হস্তক্ষেপ থেকে শুরু করে সমতল এলাকায় অনুন্নয়নের অভিযোগ নিয়ে বিঁধেছেন। দলত্যাগীদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে জিতে দেখান।’’

সম্প্রতি মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় সিবিআই গুরুঙ্গদের নামে চার্জশিট দেওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী এবং গুরুঙ্গ কাছাকাছি আসেন। গত জুলাই মাসে রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে ‘দুঃখের দিন আর নেই’ বলে মন্তব্য করেছিলেন গুরুঙ্গ। সে সময় বিজেপি নেতারা দাবি করেছিলেন, মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলার তদন্তে সিআইডি-ই বিমল গুরুঙ্গ সহ মোর্চা নেতাদের নাম জড়ায়। এ দিন সভায় সে প্রসঙ্গ তুলে গুরুঙ্গ অভিযোগ করেন, ‘‘রাজ্যের পুলিশ আমাকে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। এ ভাবে আমাকে ভয় দেখানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন